প্রমাণ লোপাটের নেপথ্যে ‘আন্দোলনকারী’দের একাংশ? ভিডিও খতিয়ে দেখছে সিবিআই

আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। ফাইল চিত্র

আরজি করের সেমিনার হলে পড়ুয়া চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর থেকেই একটা অভিযোগ বার বার সামনে এসেছে। তা হল প্রমাণ লোপাট। ইতিমধ্যেই প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে আরজি করে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। শুধুই কি সন্দীপ? নাকি প্রমাণ লোপাটের নেপথ্যে আরও কেউ ছিল? এই প্রশ্ন উঠতেই সিবিআইয়ের হাতে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর ভিডিও। এক পুলিশ অফিসারের তোলা একটি ভিডিও এবং একটি জেনারেল ডায়েরি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় পুলিশ যাওয়ার আগেই কি তথ্যজ ও প্রমাণ লোপাট করেছিলেন ১৫ জন ডাক্তারি পড়ুয়া?

সিবিআই সূত্রে খবর, ৯ আগস্ট আরজি করের চার তলার সেমিনার হলে পড়ুয়া চিকিৎসকের দেহ পড়তে থাকতে দেখেন এক ডাক্তারি পড়ুয়াই। খবর চাউর হতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান আরও বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ও ডাক্তারি পড়ুয়া। খবর যায় আরজি করের পুলিশ ফাঁড়িতে। তড়িঘড়ি চার তলার ওই সেমিনার হলে পৌঁছন এক অ্যা সিস্ট্যা ন্ট সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক। তিনি পৌঁছে দেখেন, ঘটনাস্থল ঘিরে রয়েছেন প্রায় ১৫ জন ডাক্তারি পড়ুয়া। কেউ ঘিরে রয়েছেন নির্যাতিতার দেহ, কেউ আবার ইচ্ছেমতো ছবি ও ভিডিও তুলছেন। কেউ আবার নিজের মতো ঘোরাফেরা করছেন স্টেজের উপরে। সেই ছবিই ক্যামেরাবন্দি করেন ওই অ্যা সিস্ট্যােন্ট সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক। ওই ভিডিও ফুটেজই এখন সিবিআইয়ের হাতে।
সম্প্রতিই ওই পুলিশ অফিসারকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করেছিল সিবিআই। সেদিনই সিবিআইয়ের হাতে ভিডিও ফুটেজ তুলে দেন ওই পুলিশ আধিকারিক। তিনি সিবিআই আধিকারিকদের জানান, ঘটনাস্থলে একসঙ্গে এতজন উপস্থিত থাকার ফলে আসল অপরাধীর আঙুল ও পায়ের ছাপ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে আঁচ করেছিলেন। এছাড়াও ঘটনার পর পরই পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই তথ্য ও প্রমাণ লোপাটেরও যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। সেই কারণেই প্রমাণ স্বরূপ ওই ভিডিওটি তোলেন তিনি।
এরপরই আরজি কর হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে জেনারেল ডায়েরি করেন ওই আধিকারিক। জিডিতে নথিভুক্ত করেন পুরো বিষয়টি। ওই ফুটেজ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি জিডি-র কপি পড়ার পর সিবিআই আধিকারিকরা ধারণা করছেন, ঘটনার দিন সকালে টানা এক ঘণ্টা যাঁরা ঘটনাস্থলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন তাঁরা প্রত্যেকেই ওই হাসপাতালের পড়ুয়া এবং চিকিৎসক। সিবিআইয়ের হাতে এমনও তথ্য রয়েছে, ওই তালিকায় থাকা ১৫ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজন আন্দোলনেও যোগ দিয়েছিলেন।
জানা গিয়েছে, ওই ১৫ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। ঘটনাস্থল থেকে তথ্য্ ও প্রমাণ লোপাটের জন্যয ওই ডাক্তারি পড়ুয়াদের আদৌ কোনও ভূমিকা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাঁদের জেরা করে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে বলে ধারণা সিবিআই আধিকারিকদের।