যাবতীয় উৎকণ্ঠার অবসান, রবিবার দেশে ফিরছেন বাংলাদেশে বন্দি ৯৫ জন মৎস্যজীবী। তার আগে অবশ্য শনিবার ভারতে আটক ৯০ জন বাংলাদেশিকে সেদেশে ফেরত পাঠিয়েছে প্রশাসন। হলদিয়া থেকে ভারত-বাংলাদেশ জল সীমানায় নিয়ে গিয়ে ফেরানো হবে মৎস্যজীবীদের। ওই ৯০ জনের ১২ জন ছিলেন কাকদ্বীপে। বাকি ৭৮ জন ছিলেন ওড়িশার পারাদ্বীপে।
সূত্রের খবর, আজ বাংলাদেশে আটক ৯৫ জন কাকদ্বীপ এবং নামখানার বাসিন্দা মৎস্যজীবীদের জলপথে দেশে ফেরানোর পর সরাসরি তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে গঙ্গাসাগরে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের জেল থেকে ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছেন ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী। এবার শুধু তাঁদের দেশে ফেরার অপেক্ষা।
শীতের আগে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরতে গিয়ে ভুলবশত বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ে বেশ কয়েকটি ট্রলার। ওই সমস্ত ট্রলারগুলিতে ছিলেন ৯৫ জন মৎস্যজীবী। তাঁরা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ, নামখানা এলাকার বাসিন্দা। বাংলাদেশ নৌবাহিনী তাঁদেরকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সবাইকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ পুলিশ। তারপর থেকে জেলেই ছিলেন তাঁরা।
১৩ অক্টোবর মা বাসন্তী ও জয় জগন্নাথ ট্রলার থেকে ৩১ জন জেলেকে আটক করে বাংলাদেশ। ১৪ অক্টোবর অভিজিৎ, অভিজিৎ-৩ এবং নারায়ণ নামের তিনটি নৌকা-সহ আরও ৪৮ জন জেলেকে আটক করা হয়। ২৬ অক্টোবর আরও ১৬ জন জেলেকে আটক করে কোস্টগার্ড। পরে তাঁদের সকলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর মৎস্যজীবীদের দেশে ফেরাতে উদ্যোগী হন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরার মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে নবান্ন। বাংলাদেশে আটকে থাকা মৎস্যজীবীদের পরিবারের সদস্যেরা কেমন আছেন, সেই বিষয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী খোঁজখবর নেন। রাজ্যের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
সোমবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রকে এই ইস্যুতে তুলোধনাও করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ৯৫ জন মৎস্যজীবী কিছু দিন আগে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিলেন। তাঁদের সেখানকার জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা আইনজীবী দিয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকারকে বলেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
এরপরই বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব লুৎফুন নাহার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, ভারতীয় ওই ৯৫ জন ভারতীয় মৎসজীবী গ্রেপ্তারের পর তাঁদের বিরুদ্ধে ২০২০ অনুসারে যে মামলা হয়েছিল, তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সঙ্গে ছ’টি ট্রলার ভারতে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা।