গ্রেফতার করা হল বাঁকুড়ার জওহর নবােদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমলকুমার রাজোরিয়া সহ ওই স্কুলের আরও সাতজন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। শিশু পাচার করার অভিযােগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষ এবং ধৃত এক শিক্ষিকার বাড়ি থেকে মােট পাঁচটি শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিটিই কন্যা সন্তান। এদের ভিনরাজ্যে পাচার করা হচ্ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে অধ্যক্ষ সহ তিনজনকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য পাঁচ ধৃতকে আগস্টের ২ তারিখ পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। ধৃত আটজনের মধ্যে তিনজন মহিলা রয়েছে।
দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের মেন গেট এলাকা থেকে সাতদিন আগে একটি ন’মাসের শিশুকে এখানে আনা হয়। ওই শিশুটিকে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুষমার কাছে কমলকুমার বিক্রি করেন বলে অভিযােগ।
পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, সুষমা নিঃসন্তান। এছাড়া কমলকুমারের বাড়িতেও আরও কয়েকটি শিশু ছিল। পুলিশ সব মিলিয়ে ৫ শিশুকে উদ্ধার করেছে।
কমলকুমার আদতে রাজস্থানের বাসিন্দা। এই শিশুগুলিকে রাজস্থানে পাচার করার পরিকল্পনা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন চা দোকানিও রয়েছে। তিনি ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মধ্যে যােগাযােগ করিয়ে দিতেন।
রবিবার এই বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিশুপাচার চক্র চালানাের অভিযােগ তুলে সরব হন এলাকার মানুষ। এবং জাতীয় সড়ক অবরােধও করা হয়। এরপর পুলিশ তদন্তে নামে। স্কুল সংলগ্ন বাঁকুড়া-পুরুলিয়া জাতীয় সড়কের উপর একটি মারুতি ভ্যানে দু’টি শিশুকে জোর করে তােলার চেষ্টা করছিলেন কমলকুমার। সেই সময় সেই ভ্যানের ভিতর দু’জন মহিলা বসেছিলেন। তাদের সঙ্গে ছিল দুই শিশু।
বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষের সন্দেহ হওয়ায় তারা ঘেরাও করে এবং গাড়ির মধ্যে থাকা দুই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তাদের কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় সন্দেহ বাড়ে। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
এদিকে শিশুপাচারের ধৃতের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকারের ছবিকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে নিশানা করে ট্যুইট করলেন রাজ্যের নারী, শিশু এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. শশী পাঁজা। সােমবার এই নিয়ে শশী পাঁজা টুইট করে প্রশ্ন তােলেন, বাঁকুড়ার জওহর নবােদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শিশুপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত।
বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারের সঙ্গে তার এই সংযোেগ উদ্বেগজনক। বিজেপি কি এই সব অপরাধীদের আশ্রয় দেয়? উল্লেখ্য, সম্প্রতি মােদি মন্ত্রিসভার যে রদবদল হয়েছে, সেই রদবদলে বাঁকুড়া থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন সাংসদ সুভাষ সরকার।