বড়সড় ধাক্কা খেল বিজপুরে রায় পরিবার।হালিশহর পুরসভা তৃণমুলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েও রক্ষা করতে পারলেন না মুকুল রায় ও শুভ্রাংশু রায়।পুরসভার পুনর্দখল নিল তৃণমূল।দলে ফিরলেন পুরসভার চেয়ারম্যান সহ আট কাউন্সিলর। প্রত্যেকেই লােকসভা ভােটের পর ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন। মঙ্গলবার তাঁরাই ফের তৃণমূলে ফিরে এলেন বলে বিধানসভায় দাবি করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
ফলে হালিশহর পুরসভায় তৃণমূলের কাউন্সিলরের সংখ্যা দাঁড়াল ১১। একমাস পেরােতে না ও পেরােতেই তৃণমূলে ঘর ওয়াপসি চেয়ারম্যান সহ কাউন্সিলরদের অনেকেই।এদিন ফিরহাদ তাঁদের নিয়ে বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করেন।ভয় দেখিয়ে তাঁদের জোর করে বিজেপিতে যােগ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।
ফিরহাদ আরও বলেন,সবাইকে জোর করে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।কিন্তু ওরা বিজেপির কবল থেকে ফিরে আসার সাহস দেখিয়েছেন।জঙ্গল থেকে বাঘকে বার করে নিয়ে যাওয়া যায়,কিন্তু বাঘের মন থেকে জঙ্গল বার করবে কিভাবে ? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভালােবাসাই সকলকে দলে ফিরিয়ে এনেছে।
তিনি বলেন,“রিভলভার ঠেকিয়ে, ভাঙচুর চালিয়ে তাঁদের দলবদল করতে বাধ্য করা হয়।নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে অমিত শাহের কাছে।কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযােদ্ধা হিসাবে যতটা সম্মান ওঁরা পেয়েছিলেন,দিল্লিতে বিজেপি দফতরে তা পাননি।গেরুয়া পতাকা ও পানপরাগের গন্ধে হাঁসফাঁস করছিলেন।তাই মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে ফিরে এসেছেন।উল্লেখ্য ,গত ২৮ মে বিকেলে দিল্লিতে হালিশহর পুরসভার ২১ জন তৃণমূল কাউন্সিলরের মধ্যে ১৭জন যােগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে।পরে অর্জুন সিংয়ের হাত ধরে ফের একজন বিজেপিতে যােগ দেন।এতে পুরসভায় তৃণমুলের কাউন্সিলরের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩।এদিন ফের ৮ জন তৃণমূলে ফিরে যাওয়ায় সেই সংখ্যা ১১ তে দাঁড়াল।বিজেপিরও আসন সংখ্যা ১১।একজন নির্দল।তিনি আপাতত জেলে।সেখান থেকে ফিরে তিনি কাকে সমর্থন করবেন তার ওপর নির্ভর করবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
উল্লেখ্য,২৮ মে কাঁচরাপাড়া,হালিশহর ও নৈহাটির কাউন্সিলররা পদ্ম শিবিরে যাওয়ার পর মুকুল রায় দাবি করেছিলেন এই তিন পুরসভা বিজেপির হয়ে গিয়েছে। প্রতিক্রিয়ায় সেদিন ফিরহাদ বলেছিলেন,‘চাপের মুখে ওঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ যাঁরা বিজেপিতে গিয়েছেন,কয়েকদিন পরই দেখবেন ফিরে এসেছেন।
তিনি বলেন,দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে শুধুমাত্র স্কোর বাড়ানাের জন্য মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে গুণ্ডাবাহিনী নিয়ে সন্ত্রাস তৈরি করছে বিজেপি।মিস্টার রায় আর মিস্টার সিং দিল্লির নেতাদের কাছে স্কোর বাড়াচ্ছেন । তবে এরপর যদি সন্ত্রাস করে, তাহলে অর্জুন বাহিনী থাকবে জেলে।
ফিরহাদের পাল্টা দিয়ে অর্জুন সিং দাবি করেন,পুরবাের্ড বিজেপির দখলে থাকবে। বুধবার পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনা হচ্ছে। ফিরহাদ মূর্খ,কখন কি বলেন ঠিক নেই। দল যাদের এখানে দেখিয়েছেন, তাদের মধ্যে তিনজন কাউন্সিলর।চেয়ারম্যান ছিলেন না।মাঝে এসেছিলেন।বিজেপির বারাকপুরের সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র বলেন, ‘চেয়ারম্যান ও কয়েকজন কাউন্সিলর তৃণমুলে ফিরেছেন বলে শুনছি। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর এখনও বিজেপিতেই।বিষয়টি নিয়ে এদিন সন্ধ্যার পর তাঁরা বৈঠকে বসছেন।স্থানীয় মন্ডল কমিটিকে নিয়ে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব বৈঠকে বসবেন।সেই বৈঠকে থাকতে পারেন শুভ্রাংশু রায় ও মুকুল রায়।