শুক্রবার জলপাইগুড়ির গজলডোবায় ঘটে গেল এক অনভিপ্রেত ঘটনা। গরুকে বাঁচাতে গিয়ে তড়িদাহত হয়ে একই পরিবারের চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে একটি শিশুও। ঘটনাটি ঘটেছে ভোরের আলো প্রকল্পের টাকিমারি এলাকায়। বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকা সত্ত্বেও হুকিং করতে গিয়ে ঘটে এই দুর্ঘটনা। এর জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ওই এলাকায়। এদিন সন্ধ্যাবেলার এই ঘটনার জেরে গোটা টাকিমারি এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে যে তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়েছিল, সেই তার ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রথমে সেই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় একটি গরু। সেই গরুটিকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন বাড়ির মালিক। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে একে একে পরিবারের আরও তিন সদস্য বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। একইভাবে প্রথমে তাঁর স্ত্রী, পরে তাঁর ছেলে ও ছোট এক নাতির মৃত্যু হয়। মৃতেরা হলেন, পরেশ দাস (৬৮), দিপালী দাস (৫৬), মিঠুন দাস (৩৭)। এছাড়া মেয়ের ঘরের ২ বছরের নাতি সুব্রত অধিকারী।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পরিবারটির মাঝে মধ্যেই হুকিং করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করত। এদিনও হুকিং করেছিল। কিন্তু প্রবল বৃষ্টির জেরে সেই তার ছিঁড়ে যায়। ছেঁড়া তার ভিজে মাটিতে পড়তেই অনেকদূর বিদ্যুৎ পরিবাহী হয়ে যায়। ফলে বৃষ্টি মাথায় গরুকে বাঁচাতে গিয়ে একে একে চারজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় একটি গবাদি পশুরও। মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে এই ঘটনায় বিদ্যুৎ দপ্তরের দেওয়া তথ্য একটু অন্যরকম। জলপাইগুড়ি বিদ্যুৎ সরবরাহ দপ্তরের ডিরেক্টর সুমিত মুখার্জি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে বিদ্যুৎ দপ্তর কোনোভাবে জড়িত নয়। তিনি একটি বিবৃতিতে বলেন, গজলডোবা এলাকায় ওই বাড়িতে মিটার থাকা সত্ত্বেও ওভারহেড লাইন থেকে হুকিং করে বাড়ির পাশের জমির বেড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ করে। প্রথমে একটি গরু ওই বেড়ার সংস্পর্শে এসে মারা যায়। গরুটিকে বাঁচাতে গিয়ে প্রথমে একজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়।