• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

উত্তপ্ত সন্দেশখালিতে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে ৩ জনের মৃত্যু

শনিবার সন্দেশখালিতে তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিলে চলল গুলি। পরিস্থিতি রীতিমতাে অগ্নিগর্ভ। ৪ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র (Photo: iStock)

শনিবার সন্দেশখালিতে তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিলে চলল গুলি। পরিস্থিতি রীতিমতাে অগ্নিগর্ভ। ৪ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। তৃণমুল ও বিজেপির সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে। রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তাদের একজন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। যদিও বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা সায়ন্তন বসুর দাবি এই ঘটনায় স্থানীয় ৩ বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর খবর তাদের কাছে এসেছে।

এ ঘটনায় গুলিতে আহত হয়ে কায়ুম মােল্লা নামে এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। স্থানীয় ও পুলিশি সূত্রে খবর, কয়েকদিন ধরে ন্যাজাট থানার হাটগাছি গ্রামে জোর করে বিজেপি পতাকা লাগছিল বলে অভিযােগ। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানাচ্ছিল তৃণমূলকর্মীরা। জোর করে পাতাকা এবং ফ্লেক্স লাগানার প্রতিবাদে এদিন সন্ধে নাগাদ প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূলকর্মী সমর্থকরা।

পাশাপাশি তৃণমূলের একটি বৈঠকও ছিল হাটগছি পঞ্চায়েতের ৫৬ নং বুথে। সকালেই মিছিল এবং বুথ মিটিংয়ের জন্য তৃণমূল নেতা কর্মীরা জোড়াফুলের পতাকা লাগিয়ে ছিল এলাকাজুড়ে। সেই পতাকা খুলে ফেলার অভিযােগ ওঠে বিজেপির নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সকালেও তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে কথাকাটাকাটি এবং একপ্রকার ধ্বস্তাধ্বস্তি হয় বলেও জানা যায়। ঘটনার পর তখনকার মতাে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও বিকালে পরিস্থিতি বদলায়।

তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিল শুরু হওয়ার পর বিজেপি নেতা কর্মীরা তাদের মিছিলে বাধা সৃষ্টি করে এবং কটুক্তি করে বলেও অভিযােগ ওঠে। এর মধ্যেই বিজেপি আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী আচমকাই মিছিলের মধ্যে সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালায় বলে অভিযােগ। তৃণমূল কর্মীদের লক্ষ করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলি চালায় বলেও অভিযোগ তােলা হয়। ঘটনায় তৃণমূলের ৩ থেকে ৪ জন কর্মী গুরুতর আহত হন। এর মধ্যে কায়ুম মােল্লার মাথায় গুলি লাগে বলে জানা যায়।

এরপরও তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় তাঁকে। তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘােষণা করেন। তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, সন্দেশখালিতে বিজেপির কোনও সংগঠন নেই। মানুষের মধ্যে সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করতে এ ধরনের কাজ ঘটিয়েছে বিজেপি। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর তাদের দলের দুই থেকে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন এছাড়া আহত হয়েছেন বহু নেতা কর্মী। মানুষ বিজেপির এই সন্ত্রাস মেনে নেবেন না। এর জবাব ঠিকই দেবেন। অপরদিকে বিজেপির অভিযােগ এ ঘটনায় তাদের দলের কোনও নেতাকর্মী সমর্থক যুক্ত নয়। এটি তৃণমূলের গােষ্ঠী দন্দ্বের ফল।

লােকসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপি ভাল ফল করায় তৃণমূল সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে নিজেদের জমি রক্ষা করার জন্য। পাল্টা অভিযােগ করে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেন, কয়েক দিন ধরে বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের মারধর হেনস্থা করছে তৃণমূল। এদিনও তাদের কর্মীদের ওপর হামলা করেছে তৃণমূলের সন্ত্রাস বাহিনী। তাদের সক্রিয় কর্মী তথা এসটি মাের্চার সভাপতি প্রদীপ মণ্ডল, তপন মণ্ডল সহ আরও একজন কর্মী মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌছায় র‍্যাফ এবং পুলিশ। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শুরু করা হয়েছে রুট মার্চ, চলছে পুলিশি টহলদারী। ঘটনার পর থেকেই একপ্রকার গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন মহিলা থেকে শিশুরা। পুলিশ জানিয়েছে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের খোঁজে চিরুণী তল্লাশি চলছে। এখনও এলাকায় রয়েছে আতঙ্কের পরিবেশ। যদিও সরকারিভাবে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও জানানাে হয়নি।