বিধাননগরের রাস্তার বেহাল দশা, এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বারংবার রাস্তার সংস্কার করেও মেলেনি সুফল। এবার সেই সমস্যা দূরীকরণে বিধাননগরের ১৪টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংস্কার-কার্যে ব্যবহৃত হচ্ছে উচ্চমানের বিটুমিনাস-সহ অন্যান্য উপাদান। সেই সঙ্গে রয়েছে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ। শুক্রবার বিধাননগরের মুখ্য কার্যালয়ে ১৪টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন বিধায়ক তথা দমকলমন্ত্রী সুজিত বোস। এই বৈঠকে সুজিতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীও। সংশ্লিষ্ট বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে সংস্কার-কার্যের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন বিধায়ক। ইউডিএমএ-র তরফ থেকে বিধাননগরের বিভিন্ন রাস্তা সংস্কারে ২৫ কোটি টাকার টেন্ডার করা হয়েছে বলে জানান সুজিত বোস।
আগামী ৩ মার্চ বিধাননগরের ২৮নং ওয়ার্ডের নয়াপট্টি থেকে এই সংস্কার-কার্যের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী। এদিন সুজিত বলেন, ‘এর পাশাপাশি কেএমডিএ-র তরফ থেকেও বিধাননগরের রাস্তাঘাটের জন্য ১২ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের উদ্বোধন হবে। ২৫ কোটি টাকায় বহু রাস্তার সংস্কার হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে।’ তবে শুধু রাস্তার উন্নয়নই নয়, বিধায়ক আরও জানান, ‘বিধাননগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বিশেষত গ্রীষ্মকালে পানীয় জলের সংকট দেখা দেয়। সেই সমস্যা দূরীকরণে রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় ৬৬ কোটি টাকার একটি জলপ্রকল্প করা হচ্ছে। ১৫টি জলের ট্যাংক সংস্কার করা হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত ‘সার্ফেস ওয়াটার’ প্রকল্পের সমাপ্তি হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা টিউবওয়েলের জল ব্যবহার করবো এবং পাম্পগুলির রক্ষণাবেক্ষণে জোর দেব।’
এখানেই শেষ নয়, আবর্জনা সমস্যা দূরীকরণেও ২৫টি কমপ্যাক্টর মেশিন কেনার কথা জানিয়েছেন বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ধাপার মাঠে বিধাননগরের আবর্জনা ফেলা হয়, যা সময়সাপেক্ষ। রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় রাজারহাট নিউটাউনে এই আবর্জনা ফেলার জায়গার বন্দোবস্তও করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিধাননগরের রাস্তাঘাটে উজ্জ্বল আলোর ব্যবস্থা করতে আমরা ওয়েবেলের সঙ্গে কথা বলেছি, এমনকি বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গেও আমার এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে যাতে আমরা গ্রিনসিটি থেকে কিছু ফান্ড পেতে পারি আলোর মাধ্যমে বিধাননগরের সৌন্দর্যায়নে।’
বিধাননগরের খারাপ রাস্তা নিয়ে অভিযোগের কথা স্বীকার করে বিধায়ক এদিন বলেন, ‘যাঁরা বলেন বিধাননগরে কাজ হয় না, এটি ভুল। রাস্তাঘাট খারাপ আছে কিন্তু তার দ্রুত সারাইয়ে বদ্ধপরিকর আমরা।’ বিধাননগরের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘রাজ্য সরকার রাস্তা, পানীয় জলের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ করেছে। আজ বাংলার প্রতিটি কোনা আলোকিত। বিধাননগরও সুসজ্জিত, তবে কিছু অঞ্চলে যে আলোর সমস্যা রয়েছে তা আমরা মিটিয়ে দেবো। পানীয় জল নিয়ে আগামীদিনে যেন মানুষ কোনো সমস্যার মুখোমুখি না হয়, তার চেষ্টা করছি।’