ঋণের টাকা শোধের জন্য কিডনি বিক্রির পরামর্শ দেন পাওনাদার। শুধু তাই-ই নয়, কার মাধ্যমে কিডনি বিক্রি করবেন, সেই যোগাযোগও করিয়ে দেন। কিন্তু পাওনাদারের কথা মতো কিডনি বিক্রি করার পরই সুদের অঙ্ক বাড়ানো হয় বলে অভিযোগ। উপায় না দেখে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন অশোকনগর থানার হরিপুরের এক যুবক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সুদখোর ও এক কিডনি পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অশোকনগর থানার হরিপুরের বাসিন্দা বিকাশ ঘোষ ওরফে শীতলের কাছে চড়া সুদে ৬০ হাজার টাকা ধার নেন স্থানীয় এক যুবক। মোট ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। এর মধ্যে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকাই সুদ, বাকিটা আসল। ওই যুবকের দাবি, এই পর্যন্ত সুদের প্রায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা শোধ দিয়েছেন। কিন্তু আসলের ৬০ হাজার টাকা শোধ দিতে পারছিলেন না। তখন ওই পাওনাদার কিডনি বিক্রির পরামর্শ দেন। এক কিডনি পাচারকারীর সঙ্গে যোগাযোগও করিয়ে দেন।
আর কোনও উপায় খুঁজে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত কিডনি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেন গরিব দম্পতি। যুবকের দাবি, সুদখোরের ঠিক করে দেওয়া পাচারকারীর মাধ্যমে কলকাতার এক হাসপাতালে যান তিনি ও স্ত্রী। সেই হাসপাতালেই তাঁর স্ত্রীর একটি কিডনি বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরই ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। দম্পত্তির হাতে প্রচুর টাকা আসার খবর পৌঁছে গিয়েছিল পাওনাদারের কাছে।
সুদখোর শীতল এসে দাবি করেন, আসলের ৬০ হাজার টাকা তো লাগবেই, তাঁকে আরও ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। অর্থাৎ, মোট ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন তিনি। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদও হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশের অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবক। অভিযুক্ত শীতলকে গ্রেপ্তার করেছে অশোকনগর থানার পুলিশ। কিডনি পাচারকারী মহিলাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কে কে যুক্ত আছেন, তা জানার চেষ্টা চলছে।