আগামী বুধবার থেকে ১৮১ জোড়া লােকাল নিয়ে লকডাউনের পর ছুটবে রেল। তবে, নতুন কোনও সময়সুচী আপাতত চালু হচ্ছে না। পুরনাে সময়সূচী মতােই চলবে ট্রেন। প্রসঙ্গত, যথাযথ যাত্রী পরিবহণের জন্য পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কাছে ‘উপযুক্ত সংখ্যক’ ট্রেনের দাবি করেছিল রাজ্য। তারই প্রেক্ষিতে যথাযথ পরিষেবা ও যাত্রীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়ােজনীয় সংখ্যায় পুলিশ প্রয়ােজন বলেও রাজ্যকে জানাল রেল।
বুধবার স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও পরিবহণসচিব রাজেশ কুমার সিনহার সঙ্গে লােকাল ট্রেন। চালানাের জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়াের (এসওপি) প্রস্তুতি নিয়ে আলােচনার পর আবার বৃহস্পতিবারও নবান্নে আসেন রেলকর্তারা। সেখানেই ঠিক হয়, সামনের বুধবার থেকে চলবে রাজ্যের লােকাল ট্রেন।
উল্লেখ্য, রেল ও রাজ্য পরস্পরের থেকে কী চাইছে, বুধবার তা নিয়ে এক ঘণ্টার আলােচনা হয়। রেলের একটি সূত্র জানিয়েছিল, রাজ্য সরকার চায়, ব্যস্ত সময়ে হাওড়া, শিয়ালদহ এবং খাড়গপুর ডিভিশন মিলিয়ে ২১০ টি ট্রেন চালাক রেল। তবে কবে থেকে ফের চালু হবে লােকাল ট্রেন? কোন ডিভিশনে ক’টি করে লােকাল ট্রেন চলবে? কোন ট্রেন কোন স্টেশনে দাঁড়াবে? কী ভাবে ট্রেনে ওঠা-নামা করতে পারনে যাত্রীরা? এই সব প্রশ্নের উত্তর ছিল অধরা। সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বৃহস্পতিবার নবান্নে আরও এবার রাজ্য-রেল বৈঠক হয়।
এ দিন রাজ্য প্রশাসনের কাছে লােকাল ট্রেন চালানাের এসওপি জমা দেয় রেল। ট্রেন চালানাের পদ্ধতি নিয়ে দু’পক্ষের মতের মিল হওয়াতেই লােকাল ট্রেন চালুর দিনক্ষণ ঘােষণা করা হয়। প্রসঙ্গক্রমে, করােনা সংক্রমণের জেরে ২৩ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল লােকাল ট্রেন পরিষেবা। সেই পরিষেবা চালু করা নিয়ে ২ নভেম্বর রাজ্য- রেল বৈঠক হয়। ওই আলােচনায় প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়, ১০-১৫ শতাংশ পরিষেবা দিয়ে লােকাল ট্রেন চালাতে শুরু করবে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেল। এর পরদিনই স্বরাষ্ট্রসচিব রেলকে চিঠিতে জানান, যাত্রীদের যথাযথ পরিবহণ করতে যত ট্রেন লাগে, তত ট্রেন চালানাের ব্যবস্থা করা হােক। তারই প্রেক্ষিতে ফের বুধবার আলােচনায় বসে রাজ্য ও রেল। তারপর আবার এ দিন।
এরপর সােমবার ফের বৈঠকে বসেন দু’পক্ষ। তবে, স্টেশনের ভিড় সামলানাের দায়িত্ব রাজ্য পুলিশকে নিতে হবে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে রেল। প্রতিটি স্টেশনের এন্ট্রি গেটে থাকবে নিরাপত্তারক্ষীরা, করা হবে যাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা রেলের আধিকারিকদের জানিয়েছেন, লােকাল ট্রেনে যাত্রীদের ভিড় সামাল দেওয়ার পদ্ধতি, কোন স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ালে সর্বোচ্চ সংখ্যক যাত্রীকে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে, কোন স্টেশনে কত পুলিশ মােতায়েন রাখতে হবে, হাওড়া ও শিয়ালদহের মতাে টার্মিনাল স্টেশন বাদ দিলে অন্য স্টেশনে যাত্রীদের ঢােকা-বেরােনাের উপায় কী হতে পারে- এই সব বিষয়ে রেলের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট এসওপি পেলে তবেই রাজ্য নিজের মতাে পরিকল্পনা করতে পারবে। সােমবার সেই বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।
তবে এ দিন সিদ্ধান্ত হয়েছে শিয়ালদা ডিভিশনে অতিরিক্ত ভিড় হওয়ার কারণে আপাতত ১১৪ জোড়া অর্থাৎ ২২৮ টি ট্রেন, হাওড়া ডিভিশনে ৫০ জোড়া অর্থাৎ ১০০ টি লােকাল ট্রেন চলবে। বাকি ১৭ জোড়া অর্থাৎ ৩৪ টি ট্রেন চলবে দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশন অর্থাৎ খড়গপুর থেকে চলবে।