পুরুলিয়ায় স্টিল কারখানায় জমিহারাদের হাতে জখম আইসি, গ্রেপ্তার ১৫

পুরুলিয়া, ২৩ জানুয়ারি:  আজ পুরুলিয়ায় রঘুনাথপুরের একটি স্টিল প্রস্তুতকারক কারখানায় জমিহারাদের বিক্ষোভে অশান্ত হয়ে উঠল গোটা এলাকা। আন্দোলনকারীদের হাতে আক্রান্ত হলেন পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ওই ঘটনাস্থল রণক্ষেত্রের চেহারা ধারণ করে। আন্দোলনকারীদের ছোঁড়া ইট, পাথর ও লাঠির আঘাতে জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রঘুনাথপুর থানার আইসি অর্ঘ মণ্ডল। তাঁর মাথায় ১৬টি সেলাই পড়েছে। আন্দোলনকারীদের ছোঁড়া লাঠি ও ইট-পাথরের আঘাতে তাঁর মাথা ফেটে যায় বলে সূত্রের খবর। রঘুনাথপুরের লছমনপুরের এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৫ জন আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলাও রয়েছেন।

জানা গিয়েছে, গতকাল সোমবার ওই কারখানার সামনে কাজের দাবিতে জমিহারা ও স্থানীয়দের একটি সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের জেরে ওইদিন কোনও কর্মী কারখানায় প্রবেশ করতে পারেন নি। এমনকি আন্দোলনকারীদের জন্য কারখানার ভিতরে কোনও গাড়ির যাতায়াতও বন্ধ হয়ে যায়। লাগাতার আন্দোলনের পরেও বেসরকারি ওই স্টিল প্রস্তুতকারক কারখানা কর্তৃপক্ষের কেউ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনও সমঝোতা বা আলোচনা করেনি। ফলে আজ মঙ্গলবার সকালে কারখানার মূল গেটের সামনে আন্দোলনকারীরা ফের লাগাতার আন্দোলন শুরু করে। কারখানার জিএম বিপুল পানিগিরি থানায় খবর দিতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে রঘুনাথপুর থানার পুলিশ। তাঁরা আন্দোলনকারীদের কারখানার মূল গেট থেকে সরিয়ে দেন।

এরপর সাময়িকভাবে আন্দোলনকারীরা পিছিয়ে গেলেও পরে দলবদ্ধভাবে ফিরে আসে। ঘটনার কিছুক্ষণ পর লছমনপুর গ্রামের প্রায় শতাধিক পুরুষ ও মহিলা লাঠিসোঁটা ও ইট-পাথর নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ। পাথরের আঘাতে আহত হন আইসি অর্ঘ মণ্ডল। তাঁকে মাটিতে ফেলে একাধিক আন্দোলনকারী লাঠি দিয়ে একের পর এক মাথায় আঘাত করতে থাকে। অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার অম্লান কুসুম ঘোষ বিশাল পুলিশ বাহিনী এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন এবং লছমনপুর গ্রামে অভিযান চালান। তিনি প্রায় ১০ টি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৫ জন পুরুষ ও মহিলাকে গ্রেপ্তার করেন। বাজেয়াপ্ত করা হয় একাধিক বাইক ও সাইকেল।