‘উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে’! হুমায়ুনকে তোপ শুভেন্দুর

তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের হুমকির জেরে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি দিয়েছিল জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন আইএমএ। এবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই বিতর্কিত বিধায়ককে পাল্টা আক্রমণ শানালেন। নন্দীগ্রামে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’-এর সম্প্রচার মঞ্চ থেকে করা বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যের জেরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এদিন শুভেন্দু হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এই সমস্ত লোককে কী করে উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করতে হয়, সেটা বিজেপি সরকারে এলে করে দেখাব।’

প্রসঙ্গত আরজি কর কাণ্ডে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। মহিলা চিকিৎসকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রসঙ্গত টেনে তিনি বলেন, ‘মহারাষ্ট্রের বদলাপুরে একেবারে “রামনাম সত্যা হ্যায়” করে দিয়েছি ধর্ষককে। অসমে জল খেতে খেতে রামনাম করে দিয়েছি। আর এখানে ধর্ষকদের “প্রোটেকশন” দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা। আরজি কর মামলায় পুলিশ, ডাক্তার, ধর্ষক একসঙ্গে জেলে! এটা লজ্জার।’

শুভেন্দু আরও বলেন, ‘এই রাজ্যে আরজি কর, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা ঘটছে কেবলমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই। উনি যত দিন ক্ষমতায় আছেন, তত দিন রাজ্যের এই পরিস্থিতির বদল হবে না।’


কিন্তু হুমায়ূনের বিরুদ্ধে হঠাৎ কেন এমন আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু অধিকারী? এপ্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, আরজিকর কাণ্ডের পর জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে ক্রমশ আক্রমণ শানিয়েছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর একাধিক বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বহরমপুর থানায় একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তারপরেও হুমায়ুন জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন। এমনকি জুনিয়র ডাক্তাররা সুপ্রিম কোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অপরাধ না করে জেলে যেতে হলে, তিনি যাবেন। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে এসে অপরাধ করতে দ্বিধা বোধ করবেন না। তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে ফের বলেন, ‘ওদের যেমন আন্দোলন করার অধিকার আছে, বাংলায় তৃণমূলেরও ৩ কোটি ভোটার আছে। ১০ হাজার মাঠে নামলে কী হবে, তখন বুঝবে।’

এই মন্তব্যের জেরেই গর্জে ওঠেন শুভেন্দু। এই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরেই শুভেন্দু এমন নিদানের কথা বলেছেন হুমায়ূনের বিরুদ্ধে। এবং সেটা বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে করা হবে বলে দাবি করেছেন। শুভেন্দু রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর এই বিতর্কিত মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘উনি সব সময় এমন বিতর্কিত কথা বলে থাকেন। ইউসুফ পাঠানকে (বহরমপুর কেন্দ্রে) যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের প্রার্থী করেছিলেন, তখনও বিতর্কিত কথাবার্তা বলেছিলেন। আসলে উনি এমনটা করেন বাজার মাত করা এবং প্রচারে থাকার জন্য। তাই এঁদের নিয়ে কোনও কথা বলাই উচিত নয়।’

কিন্তু হুমায়ুন কবীর বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যের পর থেমে থাকেননি। পাল্টা জবাব দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তিনি শুভেন্দুর এই মন্তব্যের জবাবে বলেন, বিজেপি বিধায়ক যেন অতীত মনে রাখেন। এপ্রসঙ্গে তিনি তৃণমূলের অতীতের রাজনীতির কথা স্মরণ করিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা ও মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে। তিনি শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এক সময় ছ’টা জেলার পর্যবেক্ষক ছিলেন উনি। মুর্শিদাবাদে এমন তাড়া করেছিলাম যে পালিয়েছিলেন। আমার নামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভুল বুঝিয়েছিলেন। কিন্তু নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দেখিয়েছি। এখন উনি বিরোধী দলে। এখন কী অবস্থা হবে জানেন তো?’