ভারত নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে মাত্র ৪৬ রানে ইনিংস শেষ করে লজ্জায় মুখ লুকিয়ে ফেলেছিল। প্রথম দিন বৃষ্টিতে কোনও খেলাই হয়নি। আর দ্বিতীয় দিনে ভিজে মাঠে প্রথমে খেলতে নেমে রোহিত শর্মা ব্রিগেডকে এইভাবে ছেলেখেলা করবে নিউজিল্যান্ডের বোলাররা, তা কেউই ভাবতে পারেননি। তার উত্তরে নিউজিল্যান্ড খেলতে নেমে ৪০২ রানে ইনিংস শেষ করে। রানের পাহাড়ে কিছুটা নুইয়ে পড়ে ভারত। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৫৬ রানে পিছিয়ে থেকে খেলা শুরু করেন রোহিত শর্মারা। শুক্রবার তৃতীয় দিনের শেষে ভারত এখনও ১২৫ রানে পিছিয়ে রয়েছে এবং তাদের হাতে সাতটি উইকেট রয়েছে। সেই কারণেই চতুর্থ দিনে ভারতীয় দল কোন জায়গায় পৌঁছবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে এখন সেই সব ভাবনা অনেক দূরে। তার প্রধান কারণ হল দিনের শেষে ভারতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলির আউটটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। বিরাট ৭০ রানে আউট হয়েছেন দিনের শেষ বলে। কিন্তু তাঁর সঙ্গী সরফরাজ খান ৭০ রানে অপরাজিত রয়েছে। শনিবার চতুর্থ দিনে সরফরাজের সঙ্গে ব্যাট করতে নামবেন ঋষভ পন্থ। তবে ঋষভ পন্থের চোট এখনও পুরোপুরি সারেনি। একটা তো চিন্তা থাকবেই ঋষভের ব্যাট করতে গিয়ে। তার পরেই ব্যাট করতে নামবেন কে এল রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা। লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ব্যাট থেকে ভালোই রান আসে। তবে প্রথম ইনিংসের আতঙ্কটা এখনও কেটে যায়নি।
নিউজিল্যান্ডের শেষের দিকে ৯ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে টিম সাউদি দ্রুত ৬৫ রান তোলাটা সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। তাঁর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের স্কোরবোর্ডটা মজবুত হয়। নিউজিল্যান্ডের দুরন্ত ব্যাটসম্যান রাচিন রবীন্দ্র ১৩৪ রান করেন। তিনি ১৩টি ৪ ও চারটি ছক্কা মারেন। কুলদীপ যাদব ৯৯ রানে তিনটি ও রবীন্দ্র জাদেজা ৭২ রানে তিনটি উইকেট পেয়েছেন। মহম্মদ সিরাজ দুটো উইকেট তুলে নিয়েছেন। যশপ্রীত বুমরা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন একটি করে উইকেট পেয়েছেন। দিনের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৮০। আর এদিন ২২২ রান করে নিউজিল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংস শেষ করে। অন্যদিকে ভারতীয় দলের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুটা বেশ ভালোই বয়েছিল। বিশেষ করে অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও যশস্বী জয়সওয়াল বেশ দৃঢ়তার সঙ্গেই ব্যাট করছিলেন। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের স্পিনার আজাদ প্যাটেলের বলে যশস্বী জয়সওয়াল ৩৫ রান করে স্ট্যাম্প আউট হয়ে যান। তারপরেই রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি বেশ গুছিয়ে ব্যাট করেছেন। দুরন্ত গতিতে রোহিত শর্মা অর্ধ শতরান করেন। তিনি ৫২ রানে আজাদের বলেই বোল্ড আউট হয়ে যান। প্রথম ইনিংসে বিরাট ও রোহিত শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন। সেই রোহিতের ব্যাট থেকেই অর্ধ শতরান আসায়, ভারতের স্কোরবোর্ডকে অন্য রূপ দেয়। তৃতীয় উইকেট জুটিতে বিরাট কোহলি ও সরফরাজ খান দারুণ খেলতে থাকেন। বিরাটের ব্যাটিং দেখে বোঝাই গিয়েছিল তিনি এবারে শতরানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। সেই পুরনো ছন্দে তিনি খেলতে থাকেন। কোহলি ও সরফরাজ খান জুটি ১৩৬ রান করেন। গ্লেন ফিলিপসের দিনের শেষ বলে বিরাট কোহলি আউট হয়ে যান। ১০২ বলে ৭০ রান করেন বিরাট। তবে বিরাটের রানটা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। তাঁর জুটি ৭৮ বলে ৭০ রান করে অপরাজিত রয়েছেন সরফরাজ।
আর এই খেলায় বিরাট কোহলি একটি নজির গড়লেন। চতুর্থ ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ৯০০০ রানের ক্লাবে নিজের নাম লিখিয়ে ফেললেন বিরাট কোহলি। এর আগে ভারতের শচীন তেণ্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড় ও সুনীল গাভাসকার এই মাইলস্টোনে নিজেদের নাম খোদাই করেছেন। বিরাট কোহলির ৯০০০ রানে পৌঁছতে ১৯৭টি ইনিংস খেলতে হয়েছে। এক কথায় বলা যায় ধীর গতিতে বিরাট পৌঁছলেন ৯০০০ রানের ক্লাবে।