• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

মৃত্যুর ১১ দিন আগে নিরাপত্তা চান, পাকস্থলিতে মেলে ক্ষতিকর পদার্থ! পূর্ণিমা কান্দুর মৃত্যু নিয়ে বাড়ছে রহস্য

ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দুর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড়। পূর্ণিমা কান্দুর পাকস্থলিতে মিলেছে বিষাক্ত পদার্থ, এমনটাই দাবি করা হয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে।

ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দুর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড়। বিষ প্রয়োগ করে পূর্ণিমা কান্দুর মৃত্যুর জল্পনার মধ্যেই আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। মৃত্যুর আগে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন পূর্ণিমা কান্দু। প্রশাসনকে লেখা পূর্ণিমা কান্দুর একটি চিঠি সামনে আসতেই ষড়যন্ত্রের জল্পনাই এখন তীব্র হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, পূর্ণিমা কান্দু বেশ কিছুদিন ধরে প্রাণহানির আশঙ্কা করছিলেন। এমনকি ঘটনার আগে তিনি নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরিবারের তরফে এই দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মৃত্যুর ১১ দিন আগে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং পুরুলিয়া জেলার পুলিশ সুপারকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন পূর্ণিমা। পরিবারের তরফে সেই চিঠি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। যার জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বিষ প্রয়োগ করে মৃত্যুর যে অভিযোগ পরিবারের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে, সেই দাবি এবার জোরালো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত ময়নাতদন্তে তাঁর পাকস্থলীতে মিলেছে বিষাক্ত পদার্থ, এমনটাই দাবি করা হয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, বিষক্রিয়ার জেরেই কি প্রাণ হারিয়েছেন নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর স্ত্রী? নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য? বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে একটা সংশয় ছিলই। অভিযোগ তোলা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকেও।

বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পূর্ণিমা কান্দুর পেটে ক্ষতিকারক পদার্থের অস্তিত্ব মিলেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে তেমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। পূর্ণিমার ছেলে দেব কান্দুর আশঙ্কা, নবমীর রাতে কেউ বিষ জাতীয় কিছু খাইয়ে মাকে খুন করেছে।

পূর্ণিমার মৃত্যুর পরই পরিবারের তরফেও দাবি করা হয়েছিল, বিষ খাইয়ে খুন করা হয়েছে। দেওরের ছেলে মিঠুন কান্দুরও দাবি ছিল, ‘স্লো পয়জন’-এর মাধ্যমে মেরে ফেলা হয়েছে তাঁর কাকীমা পূর্ণিমা কান্দুকে। এবার ময়নাতদন্তের রিপোর্টের তেমন ইঙ্গিত মেলায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনার কথাও উঠে এসেছে। যেহেতু পূর্ণিমার পাকস্থলিতে বিষাক্ত পদার্থ মিলেছে, তাই হয় তিনি নিজে বিষ খেয়েছেন, নাহলে তাঁকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে পুলিশ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে। কান্দু পরিবারের তরফে শীঘ্রই পুলিশের অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে খবর। এবার পূর্ণিমার চিঠি সামনে আসতেই পরিবারের সেই দাবি আরও জোরালো হতে চলেছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকেই অচৈতন্য অবস্থায় পূর্ণিমাকে উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ণিমার সন্তানরা বাড়িতে ছিলেন না। বাড়ি ফিরে তাঁরা মা-কে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পূর্ণিমা ঝালদা পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর ছিলেন। বেশ কয়েক মাস উপ-পুরপ্রধানের দায়িত্বও সামলান ৪২ বছর বয়সী পূর্ণিমা। ২০২২ সালের ১৩ মার্চ খুন হন ঝালদা পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। বিকেলে হাঁটতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় আততায়ীদের গুলিতে মৃত্যু হয় তাঁর। প্রাথমিকভাবে রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল তদন্ত করলেও পরে মামলাটি চলে যায় সিবিআইয়ের হাতে। ৭ জন গ্রেপ্তারও হয়। মামলাটি আপাতত বিচারাধীন।