চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত দাবি সহ মোট ১০ দফা দাবিতে ধর্মতলায় অনশনে বসেছেন কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার। উত্তরবঙ্গেও ১ জন চিকিৎসক অনশন করছেন। একাধিকবার সরকারের অনুরোধ সত্ত্বেও থামানো যায়নি আন্দোলন। ১০টি দফার মধ্যে অধিকাংশই সরকার মান্যতা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কিন্তু তা সত্ত্বেও আন্দোলন প্রত্যাহার করছেন না চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার আরও দুই জুনিয়র ডাক্তার ধর্মতলায় নতুন করে অনশন শুরু করেছেন। দিনের পর দিন অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। মূলত ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যেই এই আন্দোলন করছেন চিকিৎসকরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শাসকদলের তরফে চিকিৎসকদের কাছে পাল্টা ১৩ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। এই দাবিগুলি পেশ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি, এই ১৩ দফাও দাবি বিবেচিত হোক। এই দাবিগুলি জনতার দাবি বলেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
২) সরকারি হাসপাতালের কাজ ফেলে সুবিধামতো ডিউটি বদলে বাকি সময় বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করা যাবে না।
৩) প্রেসক্রিপশনে একই গুণমানের কমদামী ওষুধের বদলে ওষুধ কোম্পানির প্রভাবে দামী ওষুধ লেখা চলবে না। জেনেরিক টার্মে ওষুধ লিখুন, কোম্পানির ব্র্যান্ড নয়।
৪) ওষুধ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম কোম্পানির স্পনসরশিপে অনুষ্ঠান, দেশ বিদেশে ভ্রমণ চলবে না। কমিশন, কাটমানির অভিযোগের সুরাহা করতে হবে।
৫) কথায় কথায় বিভিন্ন পরীক্ষার নামে নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন নেওয়া চলবে না।
৬) ডাক্তারদের ফি যাতে মানুষের নাগালে থাকে। এই ফিয়ের কাঠামো দিতে হবে। প্রত্যেককে রশিদও দিতে হবে।
৭) হয় সরকারি, না হলে বেসরকারি, যে কোনও একটা বেছে নিন। দুটো একসঙ্গে চলবে না।
৮) মানুষের করের টাকার ভরতুকিতে যারা সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়বেন, তাঁদের সরকারি কাজেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৯) স্পেশ্যালিস্ট, সিনিয়রদের ঠিকমতো ডিউটি করতে হবে। লবি করে কলকাতায় পোস্টিং বা জেলায় গেলেও কৌশলী রস্টারে তিন-চার দিন কলকাতায় এসে প্রাইভেট প্র্যাকটিস চলবে না।
১০) শূন্যপদ পূরণ হোক। পরিকাঠামো বাড়ুক। নিজেদের কর্মক্ষেত্রকে রোগীবন্ধু রাখার দায়িত্ব সরকারের পাশাপাশি ডাক্তারদেরও নিতে হবে। সরকারি কাঠামোতে দুর্বলতা দেখিয়ে রোগীকে বেসরকারিতে যেতে বাধ্য করা বন্ধ করতে হবে।
১১) বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তিতে বিপুল টাকা, পড়তে টাকা, সেমেস্টারে ফেল করিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে পাশ- এইসব অভিযোগবন্ধনীতে কিছু ডাক্তারও আছেন। এসবে স্বচ্ছতা ও তদন্ত দরকার।
১২) বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কিছু কোটা দীর্ঘকাল আছে। হাসপাতালের কোটাগুলি নিয়ে বহু অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সেগুলি বন্ধ হোক বা স্বচ্ছতা আনা হোক।
১৩) চিকিৎসার গাফিলতিতে নির্দিষ্ট এফআইআর বাধ্যতামূলক হোক।