বুধবার ওমর আবদুল্লাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদী বলেন,’শ্রী ওমর আবদুল্লাজিকে অভিনন্দন। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন তিনি। জনগণের সেবা করার জন্য তার প্রচেষ্টাকে শুভকামনা জানাই। জম্মু-কাশ্মীরের উন্নতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর সঙ্গে এবং তাঁর দলের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে কাজ করবে।’
এদিকে জম্মু-কাশ্মীরে নয়া মন্ত্রিসভা থেকে দূরে রইল কংগ্রেস। শপথ অনুষ্ঠানের কয়েক ঘন্টা আগে কংগ্রেস সরকার থেকে দূরে থাকার এবং বাইরে থেকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানায়। জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের তকমা ফিরিয়ে না দেওয়ার প্রতিবাদে ওমর আবদুল্লার সরকারে থাকছে না কংগ্রেস। জম্মু-কাশ্মীর প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে সভাপতি তারিক হামিদ কাররা এক বিবৃতিতে জানান, ‘কংগ্রেস বারবার জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও নানা জনসভায় এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। তাই আমরা এই মুহূর্তে সরকারে থাকছিনা। আমরা খুশি নই।’
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে ওমর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের অনেক কিছু করতে হবে। এটা যে তাদেরই সরকার মানুষকে সেই আস্থা জোগাতে হবে। মানুষের কথা আমরা শুনব। গত পাঁচ ছয় বছর ধরে তাদের কথা শোনা হয়নি। এবার আমাদের এই দায়িত্ব পালন করতে হবে।’ মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বুধবার বলেন, তার সরকারের প্রথম কাজ হবে জনগণের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠা। তাঁর আশা, জম্মু ও কাশ্মীর দীর্ঘ সময়ের জন্য একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থাকবে না এবং শীঘ্রই পূর্ণ মর্যাদা ফিরে পাবে।’
এদিন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রা, মল্লিকার্জুন খাড়গে। উপস্থিত ছিলেন এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব, বাম নেতা প্রকাশ কারাত, সিপিআই নেতা ডি রাজা, ডিএমকে-র কানিমোঝি এবং এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পিডিপি প্রধান মেহবুবা মুফতিও।জেকেপিডিপি সভাপতি মেহবুবা মুফতি এদিন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর এক সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘আজ একটি খুব শুভ দিন। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ বহু বছর পর তাদের সরকার পেয়েছে। জনগণ স্থিতিশীল সরকারকে নির্বাচিত করেছে। জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণ ২০১৯ সালের পরে অনেক কষ্ট পেয়েছিল এবং আমরা আশা করি যে এই নতুন সরকার আমাদের ক্ষতগুলি নিরাময় করবে।’
ওমর এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১৪ জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তবে জম্মু ও কাশ্মীর সে সময় পূর্ণাঙ্গ রাজ্য ছিল। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত হলে বিশেষ রাজ্যের তকমা হারিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয় জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। এক দশক পর উপত্যকার ৯০টি বিধানসভা আসনে নির্বাচন হয়। এনসি জয়ী হয় ৪২টি আসনে, ২৯টি আসন পায় বিজেপি এবং কংগ্রেস পায় ৬টি আসন। এ বারের বিধানসভা ভোটে শ্রীনগরের দুটি আসন গান্ডেরওয়াল এবং বদগামে দাঁড়িয়ে দুটিতেই জেতেন তিনি।
২০১৪ সালের পর এই প্রথম বিধানসভা ভোট হল জম্মু ও কাশ্মীরে। ফের ক্ষমতায় এল আবদুল্লা পরিবার। এদিন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওমর আবদুল্লার বাবা ফারুক আবদুল্লা, মা মলি আবদুল্লা, ওমরের দুই বোন এবং ওমরের দুই সন্তানও।