উত্তর প্রদেশে বাহরাইচে দুর্গাপুজোর শোভাযাত্রায় এক যুবকের মৃত্যু ঘিরে উত্তাল গোটা এলাকা। রাস্তায় নেমেছেন কয়েক’শো মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা মাহসি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। বাহরাইচের জেলাশাসক বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি।
সোমবার সকাল থেকে কড়া হাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করছে পুলিশ। দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। সলমান নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ও দোকান থেকে মিছিলে গুলি চালানোর প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
রবিবার দুর্গাপুজোর শোভাযাত্রার সময় গান বাজানো নিয়ে তেতে ওঠে বাহরাইচ। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। পাথর ছোঁড়াছুরি, গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। গুলির আঘাতে মৃত্যু হয় এক যুবকের। তাঁর বয়স ২২। এই ঘটনায় প্রায় হাফ ডজন লোক জখম হয়েছেন, এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকেরা। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সংঘর্ষের ঘটনার নিন্দার পাশাপাশি দোষীদের কড়া শাস্তি হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
দুর্গা প্রতিমার বিসর্জনের জন্য একটি শোভাযাত্রা মনসুর গ্রামের মহারাজগঞ্জ এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রেহুয়া মনসুর গ্রামের বাসিন্দা রাম গোপাল মিশ্র শোভাযাত্রার সঙ্গে হাঁটার সময় গুলিবিদ্ধ হন। পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। রামগোপাল মিশ্রের মৃত্যুর ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
প্রশাসনের তরফে ফখরপুর শহর ও অন্যান্য স্থানে এই ধরনের শোভাযাত্রা বাতিল করা হয়। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, মূর্তি বিসর্জন অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে। ধর্মীয় সংগঠনগুলির সঙ্গে প্রশাসনকে সমন্বয় রক্ষা করতে হবে। বিসর্জন দেওয়ার জায়গাগুলিতে লোকবল বাড়ানোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও গ্রামে পুলিশ কর্মী মোতায়েন করার নির্দেশও দিয়েছেন আদিত্যনাথ।
অশান্তির ঘটনায় হার্ডি থানার ইন-চার্জ এস কে ভার্মা এবং মাহসি ফাঁড়ির ইনচার্জ শিব কুমারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। উত্তর প্রদেশের ডিজিপি প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গোন্ডা ও বলরামপুর-সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
ডিজিপি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোরক্ষপুর জোনের এডিজি কেএস প্রতাপ কুমার এবং ডিআইজি দেবীপত্তন অমরেন্দ্র প্রতাপ সিংকে অতিরিক্ত বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। এদিকে রামগোপাল মিশ্রের মৃত্যু ঘটনায় গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এলাকাবাসী মহারাজগঞ্জ বাজারে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলিতে ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন লাগিয়ে দেয়।