চলতি বছর বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩০০ জনের। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই পেশায় কৃষক। সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতে ২৯৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ২৪২ জন পুরুষ আর ৫৫ জন মহিলা।
শনিবার রাজধানীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে নিহতের সংখ্যা প্রকাশ করে বাংলাদেশের সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএফ)। ২০১৯ সাল থেকে বজ্রপাতে হতাহতের সংখ্যার রেকর্ড রাখছে এই সংস্থাটি। এসএসটিএফ জানিয়েছে, ২০২৪-এর ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরে বজ্রপাতে ৭৩ জন আহত হয়েছেন।
বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে গ্রামাঞ্চলে। কৃষিজমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তাঁদের।
এসএসটিএফ জানিয়েছে, জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টেলিভিশন চ্যানেল থেকে বজ্রপাতে হতাহতের পরিসংখ্যান সংগ্রহ করা হয়েছে।
মে মাসে ৯৬ জন, জুনে ৭৭ জন, জুলাইয়ে ১৯ জন, আগস্টে ১৭ জন এবং সেপ্টেম্বরে ৪৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া মিলেছে।
গ্রীষ্মের শেষ থেকে বর্ষা শুরু হওয়া পর্যন্ত আবহাওয়া পরিবর্তনের মাসগুলিতে বাংলাদেশে বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনা প্রায়ই ঘটে। গত কয়েক বছরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের কিছু বিশেষজ্ঞ এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর বজ্রপাতে গড়ে ৩০০ জনের মৃত্যু হয়। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বছরে ২০ জনেরও কম মারা যায় এই বজ্রপাতের কারণে।
বজ্রপাতে মৃত্যু হওয়া মানুষদের মধ্যে বেশিরভাগই কৃষক। বসন্ত, গ্রীষ্ম এবং বর্ষার মাসগুলিতে জমিতে কাজ করার কারণেঙ্গি তাঁদের প্রাণহানির সংখ্যা বেশি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রক এবং বেসরকারি সংস্থা ডিজাস্টার ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে বজ্রপাতে অন্তত ৩ হাজার ১৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে।