• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

চন্দননগরের ঐতিহ্যবাহী মণ্ডল বাড়ির দুর্গাপুজো

চন্দননগরের গোন্দলপাড়ার মণ্ডল বাড়ি। যেখানে আজও পুরনো ঐতিহ্যকে মেনে দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়।তাঁরা মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন।

হুগলি জেলার ফরাসডাঙা, আজ যা চন্দননগর নামে পরিচিত, তা একসময় ফরাসীদের উপনিবেশ ছিল। কলকাতা থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত এই চন্দননগরে  একাধিক বনেদি পরিবার রয়েছে যেখানে প্রতি বছর জাঁকজমক করে দুর্গাপুজো হয়। হয় সাবেকিয়ানার সঙ্গে ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের মেলবন্ধন।

এমনই একটি পরিবার চন্দননগরের গোন্দলপাড়ার মণ্ডল বাড়ি। যেখানে আজও পুরনো ঐতিহ্যকে মেনে দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়। এই পরিবারের আদি বাসস্থান ছিল মধ্য এশিয়ায়। তাঁরা মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন। পরিবারের সদস্য উজ্জ্বল মণ্ডল আজও সেই ঐতিহ্য বহন করে চলেছেন। তিনিই পরিবারের পুজোর যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেন।

ইউরোপীয় স্থাপত্যের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা মণ্ডলদের বাড়ির ফটক দিয়ে প্রবেশ করলে প্রথমেই রয়েছে বড় উঠোন। ঠিক তার সামনে ঠাকুর দালান। আনুমানিক ২০০ বছরের পুজো। প্রতি বছরই একচালা সিংহবাহিনী প্রতিমা তৈরি হয় ঠাকুর দালানে। প্রতিপদ তিথি থেকে চণ্ডীপাঠের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় পুজো। বৈষ্ণব মতে পুজো হয় বলে এই পরিবারে বলি প্রথা নেই। সপ্তমী তিথিতে নবপত্রিকাকে স্নান করানোর আগে পরিবারের রীতি মেনে উঠোনের চারিদিকে পাঁচ রকম ফল টাঙানো হয়। যাতে অশুভ আত্মার নজর না লাগে।

সপ্তমী তিথিতে হোমের আগুন স্থাপন করা হয়, যা নবমী পর্যন্ত জ্বলতে থাকে। অষ্টমী তিথিতে ১৫১টি ধুনো পোড়ানো হয়। রীতি মেনে দেবী দুর্গার অন্নভোগ হয় না। তার বদলে দেবীকে ফল-মূল, মিষ্টি ইত্যাদি নিবেদন করা হয়। আর অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে হয় সন্ধিপুজো। দশমীতে চিরাচরিত রীতি মেনেই গঙ্গায় দেবী দুর্গার নিরঞ্জন হয়। এ বছরও পুজো ঘিরে মণ্ডল বাড়িতে উৎসবের আমেজ।