• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

উঠল কর্মবিরতি, সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময়, দাবি না মানলে আমরণ অনশন

অবস্থান মঞ্চ থেকে সেই ঘড়ি দেখিয়ে তাঁরা বলেন, প্রতি মিনিট ও ঘণ্টার হিসাব হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যদি সরকার আমাদের দাবি না মানে, তবে আমরা আমরণ অনশন শুরু করছি।

ধর্মতলার ধর্নামঞ্চ থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা করলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তবে কাজে ফিরলেও লাগাতার আন্দোলন চলবে তাঁদের। একই সঙ্গে সরকারকে তাঁরা তাঁদের দাবি মানার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন। আরও জানিয়েছেন,  দাবি মানা না হলে আমরণ অনশনে যাবেন তাঁরা। জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে বলা হয়, ‘সাধারণ মানুষের পরিষেবার কথা ভেবেই আমরা কর্মবিরতি তুলে নিচ্ছি। আমরা বাধ্য হয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছিলাম। এখন কোনও চাপের মুখে পড়ে তা প্রত্যাহার করছি, এরকম যেন কেউ মনে না করেন।’ তাঁদের কথায়, তাঁদের জেনারেল বডি মিটিং করেই তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তবে জুনিয়র ডাক্তাররা এই ধর্মতলাতেই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়ে রাখলেন। তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হয়, হাসপাতালে বেড এবং পরিষেবা পেলে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের রাগ নিশ্চয়ই কমবে। তাঁরা বলেন, ‘আমরা মেডিকেল কলেজগুলিতে হুমকি সংস্কৃতির বিলোপ চাই। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত সকলের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে।’ তাঁরা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে দাবি করেছে যে, ২৬ শতাংশ কাজ হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ৬ শতাংশও কাজ হয়নি। অথচ ন্যায়বিচারের দাবিতে তাঁদের আন্দোলন ৫৮ দিনে পড়েছে।’ তাঁরা জানান, নিরাপত্তা নিয়ে তাঁদের নির্দিষ্ট কিছু দাবি আছে আর সে কারণেই তাঁদের এই আন্দোলন।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার এসএসকেএম থেকে মিছিল করে ধর্মতলায় এসে পৌঁছন। প্রায় ৭টা নাগাদ ধর্মতলায় পৌঁছে রাস্তায় বসে পড়ে তাঁরা বিক্ষোভ চালাতে থাকেন। ধর্মতলায় বৃষ্টি মাথায় করেই অবস্থান চালিয়ে যান তাঁরা। একটা সময় তাঁরা পুলিশের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁদের অভিযোগ, ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে তাঁদের কয়েকজন সহকর্মীকে টানাহিঁচড়ে করা হয়েছে। একজন ইন্টার্নের সঙ্গেও অভব্য আচরণ করা হয়, এই অভিযোগে রাস্তায় বসে পড়ে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।

উল্লেখ্য, আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ফের আরজি কর মামলার শুনানি রয়েছে। ইতিমধ্যেই জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে ফিরেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে জুনিয়র ডাক্তাররা পুনরায় কর্মবিরতি শুরু করায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। তাঁদের সমর্থনকারী সিনিয়র ডাক্তাররাও জুনিয়রদের কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিলেন। চিকিৎসা পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছিল।

এসব উপলব্ধি করেই জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের দীর্ঘ জেনারেল বডি মিটিংয়ের পর এসএসকেএম থেকে মিছিল করে ধর্মতলায় পৌঁছে তাঁদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করলেন। তবে, এর অর্থ নয় যে, তাঁদের আন্দোলন এখানেই শেষ হচ্ছে। এদিন তাঁরা সঙ্গে করে একটি ঘড়ি নিয়ে এসেছিলেন। অবস্থান মঞ্চ থেকে সেই ঘড়ি দেখিয়ে তাঁরা বলেন, প্রতি মিনিট ও ঘণ্টার হিসাব হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যদি সরকার আমাদের দাবি না মানে, তবে আমরা আমরণ অনশন শুরু করছি।