রাজনৈতিক সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত বীরভূমের নানুর। কিছু গ্রামবাসীর সঙ্গে বিজেপির যােগ রয়েছে এই সন্দেহ তাদের ওপর দুষ্কৃতীদের হামলা হয়। এই ঘটনায় অভিযােগের তির রয়েছে তৃণমুলের দিকে। এদিকে অশান্তির মাঝে পড়ে গুলিবিদ্ধ হলেন এক নিরীহ গ্রামবাসী। ঘটনাস্থলেই প্রান গেল তার।
সােমবার দুপুরের এই ঘটনার পর থেকে থমথমে বীরভূমের নানুরের হাটসেরান্দি গ্রাম। অশান্তি রুখতে গ্রামে রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এ দিনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ শুরু করে গ্রামবাসীরা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে বাধা দেওয়া হয়।
সােমবার স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এদিন সকাল থেকে দফায় দফায় তৃরমূল-বিজেপি সংঘর্ষ বাঁধে। দুপুর গড়াতে না গড়াতেই ওই সংঘর্ষ ব্যাপক আকার নেয়। নানুরের হাটসেরান্দি গ্রাম রীতিমতাে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। তৃণমূল এবং বিজেপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে চলে গুলি। অশান্তির মাঝে পড়ে যান শংকরী বাগদি নামে এক মহিল। তার বুকে গুলি লাগে। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাকে উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা। তবে ততক্ষণে মারা গিয়েছেন শংকরী। এছাড়াও আহত হয়েছে আরও অনেকে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, শংকরী বাগদি নামে ওই মহিলার ছেলে বিজেপির সক্রিয় কর্মী। সেই আক্রোশেই নাকি তৃণমূল কর্মীরা শংকরীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। কিন্তু শংকরী বাগদির পরিবারের সদস্যদের দাবি তারা বিজেপি করেন না।
এদিন সকালে হঠাৎই আত্মীয়-স্বজন দুষ্কৃতী গ্রামে এসে আক্রমণ চালায়। তাদের হাতে ছিল টাঙ্গি, রড, বন্ধুক, বােমা ইত্যাদি। গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শংকরী বাগদির। নিহত শংকরী বাগদির ছেলে উদয় বাগদী বলেন, তৃণমূলের লােকেরাই হামলা করেছে। ওর বাবার বাড়ি ভাবে আমরা বিজেপি করি। কিন্তু আমরা আদৌ বিজেপি করি না।
গ্রামের এক বাসিন্দা পরী বাগদী বলেন, কিছু না কিছু হলেও ওরা আমাদের ওপর হামলা করে। আমাদের মারধাের করে। আমরা কোনও রাজনৈতিক দলই করি না। আমরা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। যদিও বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং বলেন, নানুরে কোন রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। ওটা একটা পারিবারিক অশান্তি। ঘটনার তদন্ত চলছে।
অনুব্রত মণ্ডলের গ্রামের এই ঘটনায় রীতিমতাে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই হাটসেরন্দি গ্রামে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। নিহতের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানাে হয়েছে। গ্রামে মােতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। টহল দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। তবে এই ঘটনায় এখনও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।