আরজি কর হাসপাতালে পড়ুয়া চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর ৫৫ দিন অতিক্রান্ত। একটি মৃত্যু, বাবা-মায়ের চোখের জল, হাহাকার আর অনেকগুলি প্রশ্ন। তিলোত্তমার মৃত্যু ঘিরে ত্রমশই বিছোচ্ছে রহস্যের জাল। এদিকে অভয়ার বিচারের দাবিতে আজও আন্দোলনে অনড় জুনিয়র চিকিৎসকরা। বিচার চাইছেন সাধারণ মানুষও।
পুজো এসে গিয়েছে। সূচনা হয়েছে দেবীপক্ষের। তবে এ বছরের পুজোটা একটু হলেও অন্যরকম। এ বারের পুজো আন্দোলনের। এ বারের পুজো বিচার চাওয়ার। এই আবহে মহালয়ার পুণ্য লগ্নে আনুষ্ঠানিকভাবে আরজি করে উন্মোচিত হল নিহত চিকিৎসকের স্মরণে প্রতীকী আবক্ষ মূর্তি। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরেই এই আবক্ষ মূর্তি বসানো হয়েছে। মূর্তির আশেপাশেই টাঙানো হয়েছে আন্দোলনের বিভিন্ন ছবি। মহালয়ায় এই মূর্তি উন্মোচনের মাধ্যমে আরও তীব্র হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের ভাষা। কেউ পথনাটিকার মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, কারও আবার প্রতিবাদের ভাষা ফুটে উঠেছে ছবিতে। যেখানে ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক-মঞ্জীর’, সেখানে আরজি কর হাসপাতাল চত্বর থেকে স্পষ্ট হয়েছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান।
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ চলাকালীনই জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে জানানো হয়, মহালয়ার দিনেই আরজি কর হাসপাতালে নির্যাতিতা চিকিৎসকের মূর্তি উন্মোচন হবে। সেই ঘোষণা মতোই বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ প্ল্যাটিনাম জুবিলি হলের সামনের ফাঁকা জায়গায় নির্যাতিতার প্রতীকী আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। ফাইবারের তৈরি এই মূর্তির সঙ্গে নির্যাতিতার কোনও মিল নেই। শুধু এক নারীর যন্ত্রণার অভিব্যক্তিই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই মূর্তিতে।
বিনা পারিশ্রমিকে এই আবক্ষ মূর্তিটি গড়ে তুলেছেন শিল্পী অসিত সাঁই। প্রাকৃতিক দুর্যোগকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিচারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি। ৯ আগস্ট আরজি করে মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে তার অঙ্গীকার নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অসিত সাঁই। বুধবার সেই মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে নতুন করে শপথ নেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। লড়াইয়ের শপথ, বিচার ছিনিয়ে নেওয়ার শপথ, সর্বোপরি নারী-নিরাপত্তার শপথ।