• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

ডাক্তারদের ফের হুঁশিয়ারি : শুভেন্দু হুমায়ুন চ্যালেঞ্জ-পাল্টা চ্যালেঞ্জ, সরগরম রাজনীতি

তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনওদিন চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করেন এবং মুর্শিদাবাদে আসেন, আপনি সভা করবেন, আপনার জমায়েতের যা সংখ্যা হবে, তার চব্বিশ ঘন্টা-আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে আপনার দ্বিগুন জমায়েত করে হুমায়ুন কবীর আপনার মোকাবিলা করবে।’

আরজি কর কাণ্ড নিয়ে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের ফের হুঁশিয়ারি দিলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুর কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসের হুমায়ুন কবীর। যা নিয়ে বিধায়ককে আক্রমণ করতে ছাড়েননি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি ক্ষমতায় এলে, বিধায়ককে উল্টো করে ঝোলানোর কথা বলেন। পাল্টা শুভেন্দু অধিকারীকে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলায় বিজেপি’র দখলে থাকা বহরমপুর অথবা মুর্শিদাবাদ কেন্দ্র থেকে দাঁড়ানোর পাল্টা চ্যালেঞ্জ দেন ভরতপুরের বিধায়ক। যদি শুভেন্দুবাবু এই দুই কেন্দ্রের একটিতে দাঁড়ান, তাহলে তাঁকে গো হারা হারানোর চ্যালেঞ্জও দেন তৃণমূল বিধায়ক। এই চ্যালেঞ্জ-পাল্টা চ্যালেঞ্জকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।

প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর আন্দোলনরত চিকিৎসকদের প্রথমবার হুমকি দিয়েছিলেন বিধায়ক। সেসময় তিনি বলেছিলেন, ‘পাবলিক যখন মরছে, তখন ডাক্তাররা সুরক্ষিত থাকবে কেন? যদি হাসপাতালে গিয়ে পরিষেবা না পেয়ে কারও জীবন চলে যায়, তাহলে সেই জনরোষে যদি ডাক্তাররা আক্রান্ত হয়? তার দায় কে নেবে? ডাক্তাররা যদি বলেন, তাঁরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন। তাহলে পাবলিকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে সেই ব্লিডিং ঘিরে রাখার অধিকার তো আমাদেরও সংবিধান দিয়েছে।’ বিধায়কের এই হুমকির জেরে পরদিনই অর্থাৎ ১২ সেপ্টেম্বর আই এম এ-এর বহরমপুর শাখা বিধায়কের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক এবং মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপারকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। আইএমএ’র সদস্য চিকিৎসক দেবাংশু ঘোষ বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে।

এই মামলায় যদিও এখনও পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেনি বা তিনি আগাম জামিন নেননি। এর মধ্যেই ফের আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারি দিলেন ভরতপুরের বিধায়ক। এবার তিনি জানান, কেন তার নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হল? তিনি জানান, সেই মামলায় এখনও আদালত থেকে তিনি আগাম জামিন নেননি। জামিন নেবেন না।

তিনি বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তার করুক। জেলে ঢুকিয়ে দিক। জেল খেটে এসে একা ৫০ হাজার লোক নিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাবো। ৫০ হাজার লোক জড়ো করার ক্ষমতা আমার রয়েছে। সেদিন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন’এর কর্মকর্তাদেব সঙ্গে হিসেব নিকেশ বুঝে নেবো’। চিকিৎসকদের চলাফেরা এবং গতিবিধি ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কী হয় সে বিষয়ে তিনি লক্ষ্য রাখছেন বলেও ক্যামেরার সামনে জানান।

হুমায়ুন কবীরের এই হুঁশিয়ারির পরেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘তিনি সবসময় এই ধরনের বিতর্কিত কথা বলেন। এসমস্ত লোক সম্পর্কে কথা বলা উচিত নয়। এসব লোককে কী করে উল্টোদিকে ঝুলিয়ে সোজা করতে হয়, সেটা বিজেপি সরকার এলে করে দেখাব।’
এরপরই শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন হুমায়ুন কবীর। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আপনি পশ্চিমবাংলার বিরোধী দলনেতা হতে পারেন। আপনি নন্দীগ্রামে জিতে হাতির পাঁচ পা দেখেছেন।

১৯৫৬ ভোটে জিতে মমতা ব্যানার্জীকে হারিয়েছেন বলে বিরাট হিরো হয়ে গিয়েছেন । আপনার হিরোগিরির কোনও গুরুত্ব হুমায়ুন কবীর দেয়না। আপনি কত বড়ো রাজনীতিবিদ হয়েছেন, আসুন। আপনাকে আহ্বান করছি। মুর্শিদাবাদ জেলায় আপনাদের দুটো সিট জেতা আছে। সেই সিটে আপনি লড়তে আসুন। যদি আপনাকে গো হারা না হারিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে যোগ্য জবাব না দিই, তখন বলবেন। আপনার হিম্মত থাকলে, আমার চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করুন। বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে আগামীদিনে দাঁড়ান। আর না হলে গৌরীশঙ্কর ঘোষকে বসিয়ে মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়ান ৷ দেখবো আপনার কত গ্রহণযোগ্যতা মুর্শিদাবাদের মানুষের কাছে আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনওদিন চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করেন এবং মুর্শিদাবাদে আসেন, আপনি সভা করবেন, আপনার জমায়েতের যা সংখ্যা হবে, তার চব্বিশ ঘন্টা-আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে আপনার দ্বিগুন জমায়েত করে হুমায়ুন কবীর আপনার মোকাবিলা করবে।’