সম্প্রতি একটি গবেষণায় খাদ্য প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত প্রায় ২০০টি রাসায়নিকের সম্ভাব্য স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকির কথা উঠে এসেছে। ‘ফুড প্যাকেজিং ফোরাম’-এর গবেষকরা দৈনন্দিন পণ্যে এসব রাসায়নিকের ব্যবহার কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্লাস্টিক, কার্ডবোর্ড, এবং প্লাস্টিকের মোড়ক বা শ্রিঙ্ক রাপে এই ক্ষতিকর রাসায়নিকগুলো পাওয়া গেছে। এই গবেষণাটি ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন টক্সিকোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা অনুসারে, প্লাস্টিকে ১৪৩টি এবং কার্ডবোর্ডে ৮৯টি রাসায়নিকের সন্ধান পাওয়া গেছে, যেগুলো স্তন ক্যান্সারের বিকাশের সঙ্গে জড়িত। পিএফএ, বিসফেনল এবং ফ্যাথালেটসের মতো রাসায়নিকগুলো ইতিমধ্যেই গবেষকদের দ্বারা ক্ষতিকর বলে বিবেচিত হয়েছে। পিএফএ-কে “চিরস্থায়ী রাসায়নিক” বলা হয় কারণ তারা সহজে ভাঙে না এবং সময়ের সাথে শরীরে জমা হয়।
গবেষণার সহ-লেখক এবং ‘ফুড প্যাকেজিং ফোরাম’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেন মুনকে বলেন, ”এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি দেখায় যে স্তন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিকের মানবিক সংস্পর্শ কমানোর জন্য একটি বিশাল প্রতিরোধমূলক সুযোগ রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, ”দৈনন্দিন জীবনে ক্ষতিকর রাসায়নিক কমানোর মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধের সম্ভাবনা অনেকটা অন্বেষণ করা হয়নি এবং এ বিষয়ে আরও বেশি মনোযোগ প্রাপ্য।”
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে যে, সাম্প্রতিক প্রমাণ অনুযায়ী খাদ্য সংস্পর্শে ব্যবহৃত উপকরণ থেকে স্তন ক্যান্সারের জন্য সন্দেহভাজন ৭৬টি কার্সিনোজেনে মানুষের সংস্পর্শ ঘটছে। এর মধ্যে ৬১টি প্লাস্টিকের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা বাস্তব জীবনে এসব রাসায়নিকের ক্রমাগত উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়।
এই তথ্য প্রকাশের কয়েক দিন আগে ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানানো হয়েছে যে ৩,৬০০টিরও বেশি রাসায়নিক, যার মধ্যে কিছু পরিচিত কার্সিনোজেনও রয়েছে, খাদ্য প্যাকেজিং থেকে মানবদেহে স্থানান্তরিত হচ্ছে।
গবেষণায় ১৪,০০০টি অনুমোদিত খাদ্য সংস্পর্শ রাসায়নিকের তথ্য বিভিন্ন বায়োমনিটরিং ডাটাবেসের সাথে তুলনা করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যদিও গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, এটি মানব শরীরের রাসায়নিক সংস্পর্শের সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরে না।
গবেষকরা সতর্ক করেছেন যে, এসব রাসায়নিক পরস্পরের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করতে পারে। একটি নমুনায় ৩০টিরও বেশি পিএফএ পাওয়া গেছে, যা মেয়েদের ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।