আরজি কর আবহে টলিপাড়ার একের পর এক বিতর্কিত প্রসঙ্গ প্রকাশ্যে এসেছে। এবার ইন্ডাস্ট্রিতে ‘শাসক শিবিরের চোখরাঙানি’ নিয়ে ফুঁসে উঠলেন অভিনেত্রী অপর্ণা সেন। তাঁর কিছু বিতর্কিত প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই এবার টলিপাড়ায় শুরু হল পরিচালক-অভিনেত্রী খন্ডযুদ্ধ। সম্প্রতি টলি-আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে হেয়ার ড্রেসার গিল্ডের সদস্য, এক কেশসজ্জা শিল্পীর আত্মহত্যার চেষ্টা। এই প্রসঙ্গ ধরে বর্তমানে জল গড়িয়েছে অনেক দূর। সম্প্রতি এই বিষয়েই অকপট হন অভিনেত্রী। গিল্ড এবং ফেডারেশনের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই তথা ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের উদ্দেশ্যে একাধিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। তার মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত প্রশ্নটি ছিল, শুধুমাত্র শাসকদলের সদস্য হওয়ার সুবাদেই কি তিনি এই ইন্ডাস্ট্রির ফেডারেশনের সভাপতি পদে বহাল আছেন?
তবে অভিনেত্রী একাধিক প্রশ্ন ফেডারেশন সভাপতির দিকে ছুঁড়ে দিলেও, স্বরূপ কি অপর্ণা সেনের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবেন? এ প্রসঙ্গে স্বরূপের পাল্টা জবাব, ‘নিশ্চয়ই উত্তর দেব। অপর্ণা সেন সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে জানতে চেয়েছেন। আমিও সমাজমাধ্যমেই ওঁর সব প্রশ্নের উত্তর দেব।’ অর্থাৎ যেই ভঙ্গিতে অভিনেত্রী প্রশ্ন ছুঁড়েছেন, সেই ভঙ্গিতেই জবাব দিতে চান স্বরূপ। তবে এই জল্পনায় ডিরেক্টর্স গিল্ড কি চাইছে? আগামী দিনে গিল্ড কি অপর্ণা সেনের করা প্রশ্নগুলি সরাসরি ফেডারেশনের সভাপতির কাছে রাখবে? এর জবাবে ডিরেক্টর্স গিল্ডের সভাপতি সুব্রত সেনের বক্তব্য, ‘আমি কোনও কিছুই একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে প্রত্যেক সদস্য আলোচনায় বসবেন। তারপর পদক্ষেপ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, ফেডারেশন সভাপতির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রাখার পরেই বিনোদন দুনিয়া থেকে নানা ব্যঙ্গ উড়ে এসেছে অপর্ণা সেনের দিকে। উল্লেখ্য, কেশসজ্জা শিল্পীর অভিযোগ ছিল, কোনও ভাবে অপরাধী সাব্যস্ত করে তাঁকে তিন মাস কর্মবিরতিতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও গিল্ড এবং ফেডারেশন একজোট হয়ে তাঁকে কাজ করতে দিচ্ছে না। ফলে অভাব অনটনে ভুগছেন তিনি। একই অভিযোগ করেছেন অন্যান্য কেশসজ্জা শিল্পীরাও। কিন্তু তারপর ফেডারেশনের তরফ থেকে জানানো হয়, কাউকে কোনও কর্মবিরতিতে পাঠানোই হয়নি। এই প্রসঙ্গে শনিবার গিল্ড থেকে পাঠানো কর্মবিরতির চিঠি প্রকাশ্যে আনেন অভিযোগকারিণীরা।
পাশাপাশি তাঁরা দাবি তোলেন, এবছর গিল্ডের নতুন কমিটি যেন গঠিত হয় গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে। হেয়ার ড্রেসার গিল্ডের সেই বক্তব্য ডিরেক্টর্স গিল্ড প্রকাশ্যে আনে। সমাজমাধ্যমে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় সহ একাধিক পরিচালক সেই বিবৃতি ভাগ করে নেন। সেখানেই কৌশিকের পোস্টে একাধিক প্রশ্ন রাখেন অপর্ণা সেন। তাঁর প্রথম প্রশ্ন, ‘স্বরূপ বিশ্বাস কি সিনেমা তথা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির কোনও টেকনিশিয়ান? যদি না হন, তা হলে শুধুমাত্র শাসকদলের সদস্য হওয়ার সুবাদে কেমন করে তিনি এই ইন্ডাস্ট্রির ফেডারেশনের সভাপতি পদে বহাল থাকতে পারেন?’ দ্বিতীয়ত, ‘তিনি যে দু’টি ছবিতে অবজার্ভার ছিলেন, সেই দু’টি ছবির নাম কী? সহকারী পরিচালকের কার্ড হাতে পাওয়ার পর থেকে তিনি আজ পর্যন্ত ক’টি ছবিতে কাজ করেছেন, ছবিগুলির নাম কী?’ এমনই একাধিক বিতর্কিত প্রশ্নের পর পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত হয়েছেন স্বরূপ বিশ্বাস।