ফের মিছিলে অনুমতি নিয়ে টালবাহানা। একদিকে পুলিশের ‘না’, অন্যদিকে মিছিল করতে বদ্ধপরিকর সিপিএম এবং জুনিয়র ডাক্তাররা। তাই পুলিশের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ দু’পক্ষই। আগামী ২ মাসের জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় কোনও জমায়েত এবং মিছিলের ক্ষেত্রে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা পুলিশ।
বুধবার এই মর্মে বিবৃতিও জারি করেছেন পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। কিন্তু মিছিলের যাবতীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। তাই পুলিশের বাধাকে অগ্রাহ্য করেই এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ সিপিএম এবং জুনিয়র চিকিৎসকরা।
আগামী ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত কলকাতার বৌবাজার থানা, হেয়ার স্ট্রিট থানা, ধর্মতলা এলাকা বিশেষ করে কে সি দাস ক্রসিং থেকে ভিক্টোরিয়া হাউস পর্যন্ত এলাকায় জারি ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা। বুধবারই এই সমস্ত এলাকায় কোনও জমায়েত বা মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। কিন্তু ধর্মতলাতেই মিছিল করার কথা রয়েছে সিপিএমের। এদিকে পুলিশের অনুমতি মেলেনি। তাই মিছিলের অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে গেল সিপিএম। শুক্রবার বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
অন্যদিকে জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফেও মিছিলের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। শুক্রবার সেই মিছিল হওয়ার কথা। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় কলকাতা পুলিশ। পুলিশের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই কলকাতা হাইকোর্টে জুনিয়র চিকিৎসকরা। এই মামলাটিরও শুনানি হতে চলেছে শুক্রবার।
কলকাতা পুলিশের তরফে শহরের একাধিক প্রান্তে জমায়েত না করতে দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা জারির নেপথ্যেই বা কী কারণ? উঠছে সেই প্রশ্নও। এ বিষয়ে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের কাছে খবর আছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শহরের একাধিক প্রান্তে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে পারে। তাই আগেভাগে নিরাপত্তার স্বার্থেই উল্লিখিত এলাকাগুলিতে জমায়েতের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা পুলিশ। পাশাপাশি স্পষ্ট করা হয়েছে, কারও হাতে লাঠি বা অস্ত্র দেখা গেলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুজো আসতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে এবারের পুজো অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা হলেও অন্যরকম। মণ্ডপে মণ্ডপে আরজি কর থিমের ছোঁয়া। পুজোয় বিভিন্ন জায়গায় স্লোগান ওঠার সম্ভাবনা। মিছিল-বিক্ষোভ-প্রতিবাদের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই আগে থেকেই সতর্ক পুলিশ। এই পুজোয় যে বাড়তি সচেতনতা এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে সে কথা আগেই জানিয়েছেন নগরপাল। সেই নিরাপত্তার খাতিরেই পুলিশ এই জমায়েতে অনুমতি দিচ্ছে না মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।