বার আইনজীবী বদলের সিদ্ধান্ত নিহত চিকিৎসকের মা-বাবার। এতদিন তাঁদের হয়ে সওয়াল করছিলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এবার সেই দায়িত্বে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার। সুপ্রিম কোর্টে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের হয়ে এবার তিনিই সওয়াল করবেন।
৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয় তরুণী চিকিৎসকের দেহ। তাঁকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে প্রথমে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। পরে সিবিআইয়ের জালে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষও। সেই মামলার তদন্তভার এখন পুলিশের হাত থেকে সরে সম্পূর্ণভাবেই সিবিআইয়ের হাতেই রয়েছে। অন্য়দিকে আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করছে আরেক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর সেই মামালারই শুনানি হওয়ার কথা ছিল সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু তা পিছিয়ে দিয়ে শুনানির দিন ধার্য হয় ৩০ সেপ্টেম্বর। সেই শুনানির আগেই বড় সিদ্ধান্ত নিহত চিকিৎসকের মা-বাবার।
এর আগে আইনজীবী বদল করেছিল চিকিৎসকপক্ষ। গত শুনানিতে গীতা লুথরার পরিবর্তে সওয়াল করেছিলেন ইন্দিরা জয়সিং। এবার সেই পথেই হাঁটলেন নির্যাতিতার মা-বাবাও। এতদিন শীর্ষ আদালতে তাঁদের হয়ে মামলা লড়ছিলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এবার সেই শুনানিতেই নিহত চিকিৎসকের পরিবারের হয়ে সওয়াল করতে দেখা যাবে বৃন্দা গ্রোভারকে। জানা গিয়েছে, এই মামলা লড়ার জন্য নির্যাতিতার মা-বাবার থেকে তিনি এক টাকাও পারিশ্রমিক নেবেন না।
এর আগে বিকাশরঞ্জন চৌধুরীও তাঁদের থেকে কোনও পারিশ্রমিকই নিচ্ছিলেন না। কিন্তু তাঁর পক্ষে বারবার দিল্লি গিয়ে মামলা লড়া কঠিন হয়ে উঠছিল। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন নির্যাতিতার বাবা-মা। অন্যদিকে গত শুনানিতে চিকিৎসক পক্ষের তরফে জোরালো সওয়াল করতে দেখা গিয়েছিল তাদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং-কে। তাঁর প্রশ্নের প্যাঁচে রাজ্যকেও রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল। সব মিলিয়েই নির্যাতিতার পরিবারের তরফে আইনজীবী বদলের সিদ্ধান্ত।
কে এই বৃন্দা গ্রোভার? তড়িঘড়ি আইনজীবী বদল করে কেন তাঁকে দায়িত্ব দিল নির্যাতিতার পরিবার? জানা গিয়েছে, দীর্ঘ কর্মজীবনে একাধিক মানবাধিকার সংক্রান্ত এবং মহিলা ও শিশুদের বিরুদ্ধে হওয়া নির্যাতন নিয়ে মামলায় চাঁচাছোলা সওয়াল করেছেন তিনি। ১৯৮৭ সালের হাসিমপুরা পুলিশ হত্যা মামলা, ২০০৪ সালে ইসরাত জাহান মামলা, ২০০৮ সালে কান্দামালে খ্রিষ্টান বিরোধী দাঙ্গা মামলাতেও তিনিই লড়েছেন আইনজীবী হয়ে। পকসো বিলের সংশোধনী খসড়া তৈরিতে তাঁর বিশেষ কৃতিত্ব রয়েছে।
নির্যাতিতার পরিবারের তরফে আইনজীবী বদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমার পক্ষে যতটুকু করা সম্ভব ছিল, আমি করেছি। বাকিটা ওঁদের সিদ্ধান্ত’। আইনজীবী বদলে কি তবে তদন্তে নতুন কোনও মোড় আসবে? নজর সোমবারের দিকে।