• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

বাংলার উন্নয়নের জন্য অভিজিতের পরামর্শ নেবে রাজ্য, দুটি ভিশন পরিকল্পনার ঘােষণা মুখ্যমন্ত্রীর

বাংলাকে আগামী দশ থেকে কুড়ি বছরে এগিয়ে যাওয়ার উন্নয়নের লক্ষ্যে ভিশন পরিকল্পনার কথা ঘােষণা করল রাজ্য সরকার।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নােবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা নির্মলাদেবী। (Photo: IANS)

বাংলাকে আগামী দশ থেকে কুড়ি বছরে এগিয়ে যাওয়ার উন্নয়নের লক্ষ্যে ভিশন পরিকল্পনার কথা ঘােষণা করল রাজ্য সরকার। মুলত কৃষির উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার সৌজন্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরেই সরকারের এই নয়া পরিকল্পনার কথা ঘােষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কি করে লক্ষ্যে পৌঁছানাে সম্ভব হয়, সে ব্যাপারে পরিকল্পনা দফতরের সাহায্য নিয়ে অর্থ দফতরকে সুনির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মধারার কথা উল্লেখ করে বলেন, যে কোনও ভালাে কাজ করতে হলে প্রয়ােজনীয় পরিকল্পনার প্রয়ােজন রয়েছে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বেসরকারিকরণ আটকে ভিশন ২০২০ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। আর সমস্ত রকমের প্রকল্পকে এর আওতায় এই পরিকল্পনায় নিয়ে আসা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘােষণা মােতাবেক ভিশন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে দুটি পর্যায়ে। একটি হবে ২০২০ থেকে ২০৩০ এবং ২০৩০ থেকে ২০৪০। মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, এই পরিকল্পনার মধ্যে আর্থিক এবং উন্নয়নের বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত আছে। পরিকাঠামাে উন্নয়ন খাতে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার দুটি পর্যায়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং ২৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে, কিন্তু এসব সত্ত্বেও ভিশন পরিকল্পনার জন্য আরও অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দেন, বাংলায় আজ গৌরবের দিন। বাংলা আমাদের গর্ব। একজন বাঙালি নােবেল পেয়েছেন। বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই হবে আমাদের লক্ষ্য। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, রাজ্যের ঘাড়ে বিপুল দেনা থাকা সত্ত্বেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।

পুজোর পরে এদিন সৌজন্য সাংবাদিক সম্মেলনে গত আট বছরের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাধীনতার পর থেকে ২০১১ এবং ২০১১ সালের পর থেকে যাবতীয় উন্নয়নের বিষয়টি উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ক্যাপিটাল এক্সপেনডিচার ২২২৫ কোটি টাকা থেকে ২৩৭৮৭ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি হয়েছে। গ্রস ডেমেস্টিক প্রােডাক্ট ২.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।

একই সঙ্গে তিনি রাজ্যের রাজস্ব বৃদ্ধির বিষয়টিও উল্লেখ করতে ভােলেননি। রাজ্যে পরিকল্পনাখাতে ছ’গুণ এবং কৃষিসহ অন্য সমস্ত খাতে ন’গুণ ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।

সৌজন্য ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে দুর্গাপুজো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য রাজ্য পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি দাবি করেন, পুজোর সময় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সমস্ত রকম পরিস্থিতি ভালােভাবে সামাল দিতে পেরেছে পুলিশ। পুলিশ রিপাের্ট কার্ড প্রকাশ করে তিনি রাজ্য পুলিশকে একশাে শতাংশ নম্বর দিয়েছেন।

সৌজন্যর বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বুধবার বিকালে সােজা বালিগঞ্জে নােবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি অভিজিতের মা নির্মলাদেবীর সঙ্গে আড্ডায় জমে যান। ফুল ও মিষ্টি উপহার দেন অভিজিৎবাবুর মাকে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বালিগঞ্জের বাড়িতে যান রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, ইন্দ্রনীল সেন এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অভিজিৎ আমাদের গর্ব। বাংলার উন্নয়নে আমরা ওঁর পরামর্শ নেব। আশা করছি, ওঁর পরামর্শ আমাদের কাজে লাগবে। রাজ্য সরকার অভিজিৎকে সংবর্ধনা জানাবে।