রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে প্রিন্সিপাল, ভাইস-প্রিন্সিপাল , স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে বৃহস্পতিবার বিকেলে এই বৈঠক হবে। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন কলকাতার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তারা। রাজ্যের বাকি মেডিক্যাল কলেজগুলির অধ্যক্ষরা ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেবেন।
আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পর নিরাপত্তার দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্যের সমস্ত মেডিকেল কলেজ এ ও হাসপাতালগুলির জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারের তরফে ‘রাত্তিরের সাথি’ প্রকল্প চালু করা হয়। মূলত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতেই এই প্রকল্প চালু করা হয়। নাইট শিফটে কাজ করেন এমন স্বাস্থ্য কর্মীদের কথা মাথায় রেখে এই বিশেষ প্রকল্প চালু করা হয়। সেই প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে আগামী বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পে রাজ্যের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে মহিলা বান্ধব সিকিউরিটি ফোর্স রাখা হবে। মহিলাদের জন্য থাকবে পৃথক শৌচালয় ও বিশ্রাম কক্ষ। হাসপাতালগুলিতে ‘ সেফ জোন ‘ তৈরী করে সিসিটিভি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে। স্থানীয় থানা এবং পুলিশের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে মোবাইল ফোন অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ থাকবে। সব মহিলা কর্মীদের ওই অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে।
সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল, অধিকর্তাদের নিয়ে গত ১২ তারিখ বৈঠকে বসার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। সেই সময় আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ-আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য। কর্মবিরতি পালন করছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্যভবনের সামনে চলছিল আন্দোলন। সরকারি হাসপাতালগুলির চিকিৎসা পরিষেবা সামাল দিচ্ছিলেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা । এই পরিস্থিতিতে ১২ তারিখের বৈঠক বাতিল হয়। বলা হয়েছিল, বর্তমানে মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলির সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে এই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হল। সেই বাতিল বৈঠকই হবে বৃহস্পতিবার।
জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি মেনে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার খোল-নলচে বদলে নতুন করে সাজাতে উদ্যোগী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য প্রশাসন কী ভাবছে, প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্টও। এর পরই নড়েচড়ে বসে রাজ্য প্রশাসন। চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হাসপাতালগুলিকে সিসি ক্যামেরা দিয়ে মুড়ে ফেলা হবে। সূত্রের খবর, আর জি করের সব ভবনের প্রতিটি তলাকে সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে রাখা হবে। এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে হাসপাতালের সর্বত্র ৫০০টিরও বেশি ক্যামেরা বসানো হবে। ইতিমধ্যেই ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে বর্তমানে রয়েছে ৩৩০টিরও বেশি সিসি ক্যামেরা, সেখানে বসানো হবে আরও ৪০০ ক্যামেরা। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও প্রায় ৬০০টি ক্যামেরা বসানো হবে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে রয়েছে প্রায় ৩০০টি ক্যামেরা। সেখানে আরও ৮০০টি সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা। এসএসকেএম হাসপাতালে প্রায় ১২০০টি সিসি ক্যামেরার সাহায্যে নজরদারি চলে । সেখানেও আরও সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।