• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত চলবে, জানাল কর্ণাটক হাইকোর্ট 

হাইকোর্টে ধাক্কা খেলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। মঙ্গবার  কর্নাটক হাইকোর্ট রায় দিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলবে। রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত মতো তদন্ত করবে লোকায়ুক্ত। মাইসুরু আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটির জমি কেলেঙ্কারিতে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।  মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর সেই আবেদন খারিজ করে দেয় কর্ণাটক হাইকোর্ট।  

হাইকোর্টে ধাক্কা খেলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। মঙ্গবার  কর্নাটক হাইকোর্ট রায় দিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলবে। রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত মতো তদন্ত করবে লোকায়ুক্ত। মাইসুরু আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটির জমি কেলেঙ্কারিতে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।  মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর সেই আবেদন খারিজ করে দেয় কর্ণাটক হাইকোর্ট।  


হাই কোর্ট রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে আইনি ব্যাখ্যা দেয়।  হাইকোর্ট বলেছে, দুর্নীতির প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত হওয়া দরকার। বিশেষ করে সেই অভিযোগ যদি সরকারি পদাধিকারী এবং জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে হয়। প্রসঙ্গত, গত ১৯ আগস্ট থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই মামলার মোট ৬ ইট শুনানি হয়।  তবে হাইকোর্ট এই মামলার রায়দান স্থগিত রেখেছিল। মঙ্গলবার বিচারপতি এম নাগাপ্রসন্নের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ মুখ্যমত্রী সিদ্দারামাইয়ার আবেদন খারিজ করে দেয়। বিচারপতি নাগাপ্রসন্ন বলেন, ‘আবেদনে যে বিষয়গুলি উল্লেখ করা হয়েছে তার তদন্ত প্রয়োজন, এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই কর্মকাণ্ডে যাঁরা সুবিধে ভোগ করেছেন, তাঁরা আবেদনকারীর পরিবার, বাইরের কেউ নন।’
 
এদিন আদালতে কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার হয়ে লড়েন প্রবীণ আইনজীবী মনু সিংভি এবং রবি কুমার।  রাজ্যপাল গেহলটের পক্ষে সোয়াল করেন সলিসিটর-জেনারেল তুষার মেহতা। এছাড়াও লড়েন অ্যাডভোকেট জেনারেল শশী কিরণ শেট্টি।  
 
টিজে আব্রাহাম, প্রদীপ এবং স্নেহময়ী কৃষ্ণা নামে তিন জন সমাজকর্মী রাজ্যপাল থাওয়ার চাঁদ গেহলটের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকারি জমির প্লট নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। মূল অভিযোগ, সিদ্দারামাইয়া নথিপত্র বদলে তাঁর স্ত্রী পার্বতীকে মাইসুরু আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বা মহীশূর নগরোন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আবাসন প্রকল্পের মূল্যবান জমি সস্তায় পাইয়ে দিয়েছেন। এরফলে তিনি প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সুবিধা পেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক্ষেত্রে তিনি প্রভাব খাটিয়েছেন। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গত ১৭ আগস্ট তদন্তের নির্দেশ দেন রাজ্যপাল থাওয়ার চাঁদ গেহলট। রাজ্যপালের এই সাংবিধানিক ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন প্রশাসনিক প্রধান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া।
 
মামলাকারী সমাজকর্মী স্নেহময়ী কৃষ্ণা এদিন বলেন, ‘ আজ হাইকোর্ট মামলা খারিজ করেছেন। এটা নিশ্চিতভাবে আমাদের জয়। আমাদের সংগ্রামের প্রতি বিচার হয়েছে। 
 
এদিকে হাইকোর্টের এই রায়ে সিদ্দারামাইয়ার বিপদ বাড়ল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অনেকেই মনে করছেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পরিণতি হতে পারে সিদ্দারামাইয়ার। কারণ, মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তে নিয়োজিত লোকায়ুক্ত তদন্তের ভার সিবিআই, ইডির মতো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে থাকে। ফলে তদন্তের নির্দেশ বহাল থাকায় ইডি, সিবিআই তলব করতে পারে মুখ্যমন্ত্রীকে।
 

এদিকে সিদ্দারামাইয়া আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটায় দল তাঁকে সময় দিচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান।। কিন্তু কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝেছে, অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়। গত মাসেই মুখ্যমন্ত্রীকে দিল্লিতে ডেকে কথা বলেন রাহুল গান্ধী এবং মল্লিকার্জুন খাড়্গে। সেই বৈঠকেই প্রবীণ নেতাকে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়। তা হল, আইনি লড়াইয়ে সিদ্দারামাইয়া তদন্ত থেকে অব্যাহতি না পেলে তাঁকে পদ ছাড়তে হবে। কংগ্রেস সুত্রের খবর, সিদ্দারামাইয়া চান, আগে আদালতে বিচার হোক। তিনি দুর্নীতি করেছেন প্রমাণ হলে সরে যাবেন। কিন্তু রাহুল গান্ধী চান আদালত তদন্ত বহাল রাখলেই সিদ্দারামাইয়ার সরে যাওয়া উচিত।   

এদিকে আদালতের এই রায়ের পর সিদ্দারামাইয়ার পদত্যাগ দাবি করেছে বিজেপি।  পাল্টা রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিব কুমার বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তিনি কোনও ভুল করেননি। কোনও দুর্নীতিতে তিনি জড়িত নন। এটা বিজেপির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আমরা তাঁর পাশে আছি।’ ‘