• facebook
  • twitter
Tuesday, 24 September, 2024

আর ‘তারিখের পর তারিখ নয়’, এবার দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করবেন মধ্যস্থতাকারীরা

ড: শুভাশিস মুহুরী জানিয়েছেন, 'এবছর প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রায় ৫০ জন মিডিয়েশন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তৃতীয় দফায় ২৮ জন রয়েছেন প্রার্থী হিসাবে। এর সার্বিক লক্ষ্য হল, দু'পক্ষের সহমতের ভিত্তিতে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি ঘটানো।'

‘তারিখের পর তারিখ’ –এই প্রবাদটি আদালতে বিচারের দীর্ঘসূত্রতাকে হাড়ে হাড়ে বোঝায়। বিচার পেতে গেলে আইনজীবীদের পেছনে দীর্ঘমেয়াদী খরচ তো আছেই। ঠিক এমতাবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো একাধারে যেমন নিম্ন আদালতগুলিতে ধারাবাহিক জাতীয় লোক আদালত বসে। ঠিক তেমনি সুপ্রিম কোর্টের পরিচালনায় কলকাতা হাইকোর্টের মিডিয়েশন এবং কনসিলিয়েশন কমিটি নিরবিচ্ছিন্নভাবে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি ঘটাতে নিরন্তর কাজ করে চলেছে।

১৯৯৯ সালে ৮৯ সিপিসি (দেওয়ানী কার্যবিধি) ধারায় মিডিয়েশন প্রস্তাবনায় আসার পর তা ২০০২ সালে কার্যকর হয় সারা দেশে। যদিও ২০০৩ এবং ২০০৫ সালে এই মিডিয়েশন আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সালেম এডভোকেট বার এসোসিয়েশন (তামিলনাড়ু) কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা করেছিল সুপ্রিম কোর্টে। দুটি মামলাতেই সুপ্রিম কোর্ট দেওয়ানী কার্যবিধির ৮৯ নম্বর ধারাকে সাংবিধানিক বলে আখ্যা দেয় কিছু সংশোধনীর সহিত।

২০০৯ সালে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মোহিত শান্তিলাল শাহের সময় মিডিয়েশন এবং কনসিলিয়েশন কমিটি কাজ শুরু কর। জমি- জায়গা সংক্রান্ত মামলা থেকে বাণিজ্যিক ও দাম্পত্য মামলাগুলির নিষ্পত্তি করছেন কলকাতা হাইকোর্টের মিডিয়েশন এবং কনসিলিয়েশন কমিটির নিযুক্ত মিডিয়েটর বা মধ্যস্থতাকারীরা। এজন্য বাদী-বিবাদী পক্ষদের কোনও খরচ করতে হয়না। বছরের পর বছর শুনানির তারিখের জন্য চাতক পাখির মতন অপেক্ষাও করতে হয়না!

কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি সৌমেন সেন মহাশয়ের নেতৃত্বধীন মিডিয়েশন এবং কনসিলিয়েশন কমিটি সারা বছর বিচারাধীন মামলাগুলি বা প্রাক বিচারাধীন বাণিজ্যিক মামলাগুলি দু’পক্ষের সম্মতিতে নিষ্পত্তি ঘটাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। উক্ত কমিটির সদস্য সচিব হিসাবে রয়েছেন শ্রীযুক্ত সঞ্জীব কুমার শর্মা।

এবছর বেশ কয়েকটি পর্যায়ে মিডিয়েশন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে কলকাতার উচ্চ ন্যায়ালয়। যাতে প্রায় ১২৫ জন যোগদান করবেন। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বা বিচারক, বর্ষীয়ান আইনজীবীদের পাশাপাশি এবার সমাজের অন্য পেশার ব্যক্তিদের মিডিয়েটর হিসাবে দেখা যাবে। কলকাতা হাইকোর্টের পাশাপাশি রাজ্যের ৭২ টি এডিআর (বিকল্প বিবাদ নিষ্পত্তি কেন্দ্র ) সেন্টারে (সদর এবং মহকুমা আদালতে অবস্থিত) মিডিয়েটররা দু’পক্ষকে নিয়ে শুনানি চালিয়ে থাকেন। দু’মাসের সময়সীমায় এই মামলাগুলির চূড়ান্ত রিপোর্ট জারি হয়৷

কলকাতা হাইকোর্টের অরিজিনাল সাইডের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ( লিগ্যাল) আর, মিডিয়েশন এবং কনসিলিয়েশন কমিটির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ড: শুভাশিস মুহুরী জানিয়েছেন, ‘এবছর প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রায় ৫০ জন মিডিয়েশন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তৃতীয় দফায় ২৮ জন রয়েছেন প্রার্থী হিসাবে। এর সার্বিক লক্ষ্য হল, দু’পক্ষের সহমতের ভিত্তিতে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি ঘটানো।’

জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে কলকাতা হাইকোর্টের প্রায় ৩০টি এবং বিভিন্ন নিম্ন আদালতের ১৫০০টি মামলা বিচারধীন রয়েছে মিডিয়েশন এবং কনসিলিয়েশন কমিটির কাছে।