সমস্ত ধর্মীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে শারদোৎসবের আবেদন এখন বিশ্বজনীন। বর্তমানে দুর্গাপুজো কেবল মন্ত্র উচ্চারণ ও আচার অনুষ্ঠান পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। দুর্গাপুজো এখন বহু বিচিত্র যুগোপযোগী উপাদান সহযোগে এক বর্ণাঢ্য উৎসবে পরিণত হয়েছে। জীবনের সব রংকে ছুঁয়েছে দুর্গাপুজো। মানুষের চাওয়া পাওয়া দুর্গাপুজোর সঙ্গে জুড়ে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্যেও জোয়ার এসেছে। সব কিছু মিলে দুর্গাপুজো এখন এক মহা মিলনমেলা, আনন্দমেলা ও বাণিজ্যমেলায় পরিণত হয়েছে। পুজো এখন বাংলার ধর্মীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক এমনকি রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অপরপক্ষে এই উপলক্ষে আর্থিক লেনদেন এক সামাজিক বিনিয়োগ, যা সামাজিক বন্ধনকে মজবুত করে। সাংস্কৃতিক বিনিয়োগও বটে।
হিন্দুশাস্ত্রে পুজোর ঐতিহ্য ও পরম্পরায় অর্থনীতির বিশেষ ভূমিকা আছে। সুদীর্ঘকাল ধরে পুজোকে কেন্দ্র করে সমাজে বিভিন্ন জাত-বর্ণ ভিত্তিক পেশাগত মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক আদানপ্রদান চলে আসছে। কুমোর, মৃৎশিল্পী, ঢাকী, নাপিত, মালাকার, পটুয়া শিল্পী ,তাঁতী, গোয়ালা, ময়রা , পুরোহিত প্রভৃতি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে পুজোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ও আছেন। আগে সমাজের বর্ধিষ্ণু সম্প্রদায় – জমিদার, তালুকদার বা অন্যান্য বৈভবশালী পরিবারই দুর্গাপুজো করতেন। কালের অন্তরালে বাংলার সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। বাংলার দুর্গোৎসবের আড়ম্বর ও জাঁকজমক ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরোও কার্নিভালের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। পুজোর আঙ্গিকও বদলে গেছে। দুর্গাপুজো এখন বারোয়ারী ও সর্বজনীন।
একথা বললে অত্যুক্তি হবে না, বর্তমানে শারদোৎসব বাংলার অর্থনীতির মানদণ্ডের অন্যতম সূচক। শারদোৎসব এখন সর্বজনীন শারদ-বাণিজ্য। শারদোৎসব ধনী, দরিদ্র , জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের অর্থনীতির উপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলে। পুজোর কয়েক মাস আগে থেকেই সাজো সাজো রব। গ্রাম থেকে মফস্বল, শহর সর্বত্র পুজোর ছোঁয়া লাগে। কলকাতা ও জেলায় প্রায় তিরিশ হাজার দুর্গাপুজো হয়। আর এই পুজোকে কেন্দ্র করে বাংলার অর্থনীতি আবর্তিত। কম করে এক লক্ষ থেকে কয়েক কোটি টাকা বাজেট ধার্য হয় প্রতি পুজোর জন্য। অস্বীকার করা যাবে না প্রচুর মানুষের জীবিকা নির্ভর করে শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে।
শারদোৎসব এখন এক বিরাট শিল্প। প্রচুর মানুষ সারা বছর মুখিয়ে থাকে কখন দুর্গাপুজো আসবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণের উর্ধ্বে শারদোৎসব। তাই হুগলির পাণ্ডয়ায় মাটির প্রদীপ তৈরিতে মগ্ন মৃৎশিল্পী। মোমবাতি, ফানুস ও বিভিন্ন বৈদ্যুতিন বাতি তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। কলকাতার মেটিয়াবুরুজে মুর্শিদাবাদ থেকে আগত মুসলিম কারিগররা পুজোর ছয় মাস আগে থেকেই ব্যস্ত থাকেন জামা প্যান্ট তৈরির কাজে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার আতসবাজি ও রংমশাল শিল্পের হাব চম্পাহাটি ও নুঙ্গি এলাকায় প্রায় আট হাজার ছোট বড়ো কারখানা আছে। বহু পরিবার তুবড়ি, আতসবাজি ও রংমশাল শিল্পের সাথে যুক্ত। হাওড়া ব্রিজের কাছে মল্লিক ঘাটে পুজোর মরসুমে ফুল বিক্রেতাদের ব্যস্ততা। রানাঘাট, ধানতলা ও সন্নিহিত এলাকার ফুলচাষীরা অপেক্ষা করে থাকেন কবে আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা হবে, দুর্গাপুজো আসবে , তাঁদের ছেলেমেয়ের মুখে হাসি ফুটবে।
নদিয়ার শান্তিপুর, ধনেখালিতে অধিক রাত পর্যন্ত তাঁতের খটাখট শব্দ। মালদা, মুর্শিদাবাদের রেশম শিল্পীদের রাতের ঘুমে টান। কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণিতে মৃৎশিল্পীদের সঙ্গে কাদামাটির সহাবস্থান। বাঁকুড়ার টেরাকোটা শিল্পীদের অপূর্ব কারুকার্যময় প্রতিমা। জঙ্গলমহলে আদিবাসিরা কেন্দুপাতা থেকে থালা বাটি তৈরিতে ব্যস্ত। পুজো মরসুমে বাড়তি কিছু রোজগার তাদের নিত্য অভাব মেটাতে না পারলেও মুখে একটু হাসি ফোটায়। চন্দননগরের আলোক শিল্পের বাজার দুর্গাপুজো থেকেই শুরু। শোলার অপ্রতুলতার জন্য থার্মোকলের ব্যবসার বাড়বাড়ন্ত। প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় বাইচ উপলক্ষে মাঝিমল্লারদের আয়ও অনেক বৃদ্ধি হয়। বাজনাবাদক ও বাহক বাহিনীর আয়ও প্রতিমা নিরঞ্জন ও শোভাযাত্রার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পুজো উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে, বহু মানুষের দৈনন্দিন রুজি রোজগার মেলার বেচাকেনার উপর নির্ভরশীল।
বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকীদল সারি বেঁধে পুজোর আগে শিয়ালদা ও হাওড়া স্টেশনে নেমে কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন পুজোমণ্ডপে হাজির হন। কলকাতার মহাত্মা গান্ধী রোডে মেছুয়া বাজারে কলকাতা ও জেলার ফল ব্যবসায়ীদের ছোটাছুটি চোখে পড়ার মতো। গ্রামগঞ্জ থেকে সব্জীর পসরা নিয়ে আনাজ বিক্রেতাদের আনাগোনা শিয়ালদহের কোলে মার্কেটে। বাড়তি লাভের আশায়। কুমারটুলির প্রতিমা পাড়ার পুজোর তিন চার মাস আগে থেকেই বাঁশ, বিচুলি, দড়ির ভিড়। চিৎপুরের যাত্রা পাড়ার পুজোর সময় বুকিং শুরু। অনেক মানুষ যাত্রা শিল্পের সাথে যুক্ত আছেন। বিনোদন জগতের ব্যক্তিদের কাছেও শারদোৎসবের অর্থনীতি অন্যমাত্রা বহন করে। পুজো উপলক্ষে কলকাতার ও জেলার ছোট বড়ো সোনার দোকানে ও সোরুমে অধিক ক্রেতার পদধূলি। ধনতেরাশে তার পূর্ণতাপ্রাপ্তি।
বেশ কয়েক বছর আগে আপামর বাঙালী অপেক্ষায় থাকতো তাদের প্রিয় শিল্পীর গানের পুজো এলবামের জন্য , কখন বাড়িতে আসবে পচ্ছন্দের পুজোবার্ষিকী পত্রিকা। ছোট ব্যবসায়ী থেকে বড়ো ব্যবসায়ী সবাই শারদোৎসবের অপেক্ষায় থাকেন। রাস্তার মোরে ছাতা মাথায় চর্ম কারিগর থেকে শপিং মল সর্বত্র তখন শারদবাণিজ্য। ছোট বড়ো মাঝারি কাপড়, জুতো, প্রসাধনী দোকান এক দু’মাস আগে থেকেই পসরা সাজিয়ে বিভিন্ন পুজো ডিসকাউন্ট ঘোষণা করে। খবরের কাগজে, টিভিতে, অনলাইনে বিজ্ঞাপনের হুড়োহুড়ি। বাড়ির মেয়ে বউরাও মোবাইলে আঙুল চালনায় ব্যস্ত, সস্তায় যদি মনমতো পুজোর জিনিস পাওয়া যায়। পুজোর মরসুমে অনলাইন ব্যবসা এখন শহরের সঙ্গে সঙ্গে গ্রাম-গঞ্জেও থাবা বসিয়েছে—অদৃশ্য মালিকানা ব্যবসা।
শারদোৎসবকে সামনে রেখে ধনলক্ষ্মীর আবির্ভাব বাংলার বাণিজ্যের আকাশে। গ্রাম বাংলার অর্থনীতির মূলভিত্তি কৃষি। যে বছর কৃষিজ ফসল ভালো হয় এবং চাষি ফসলের ভালো দাম পান সে বছর গ্রাম বাংলায় শারদবাণিজ্যের রমরমা চোখে পড়ার মতো। গ্রামের বাঁশবাগান থেকে উচ্চমূল্যে বাঁশ লরি, ট্রাক ভর্তি হয়ে পাড়ি দিচ্ছে শহরে পুজোমন্ডপে, কুমোর পাড়ায়। কলকাতা এবং শহরতলিতে এখন থিম পুজোর হিড়িক। থিম পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ শিল্পীদেরও রোজগার ও স্বীকৃতি উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে। পুরুলিয়ার ছৌনৃত্য শিল্পীদের পুজোর সময় জেলার বাইরে থেকে ডাক আসে মোটা টাকার বিনিময়ে। জেলায় জেলায় শারদবাণিজ্যের সুফল পাচ্ছে বাংলার কৃষক, শ্রমজীবী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। বিদেশেও প্রতিমা ও আনুষাঙ্গিক পুজো উপকরণ এমন কি বাংলার ঢাকীরাও পাড়ি দেন।
ফলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার আমদানি হচ্ছে। দেশ বিদেশের বিভিন্ন নামীদামি কোম্পানী অপেক্ষায় থাকে পুজোর মরসুমের জন্য। পুজো উপলক্ষে তারা কোটি কোটি টাকা স্পনসর করে বাণিজ্যিক লাভের আশায়। বিদেশ থেকে এমনকি পাকিস্তান থেকে শিল্পীরা আসেন কলকাতা তথা বাংলায় পুজোমণ্ডপ, প্রতিমা কারুকার্যের জন্য। ফ্রান্স এবং আমেরিকা থেকে আসে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের বিশেষজ্ঞ দল বিভিন্ন পুজোমণ্ডপের সার্বিক শিল্পসত্ত্বা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উৎকর্ষের মান দেখভাল করার জন্য। কালীপুজো উপলক্ষে ধনতেরাসেও বাংলায় বাণিজ্যের ছোঁয়া। ধনতেরাসে মুহরাত উপলক্ষে শেয়ার মার্কেট বাজার স্টক এক্সচেঞ্জও নির্দিষ্ট বাণিজ্যিক সময়ের পরেও লেনদেন হয়। সংস্কার এই সময়ে কিছু সোনা বা দামী ধাতু কেনা শুভ লক্ষণ পরিবারের সুখ সমৃদ্ধির জন্য।
পুজোর মরসুম ভ্রমণ ও পরিবহন শিল্পের পৌষমাস। বাঙালী ভ্রমণ পিয়াসু। শারদোৎসব উপলক্ষে অফিস আদালত স্কুল কলেজ বন্ধ থাকে। হাতে থাকে বোনাস বা উপরি টাকা। সেই অবসরে দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়ে কাটাতে অনেকে সপরিবারে বাইরে বেড়িয়ে পড়েন। পুজোর দিন কয়েক হোটেল,রেষ্টুরেন্ট, ফুটপাতের ফুচকাওয়ালা, ছোট খাবারের স্টলে ভিড় উপচে পড়ে। বাঙালি ভোজনরসিক। খেতে ভালোবাসে৷। তাই আনন্দ ফূর্তির সঙ্গে সঙ্গে খানাপিনাও দেদার চলে পুজোর ক’দিন। এই সময় আবগারি দপ্তর বিরাট অংকের মুনফা করে। সমীক্ষা বলছে, ২০২৩ সালে খাদ্য ও পানীয় শিল্পে অতিরিক্ত ১০০-১২০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। সেলুন, স্পা, বিউটি পার্লারে, কসমেটিক স্টোরে অনেকে ঢুঁ নিজের সৌন্দর্য্যকে আরও ফুটিয়ে তুলতে।
শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে বাংলায় প্রতিবছর বিভিন্ন বাণিজ্যিক কার্যকলাপের মধ্যে দিয়ে প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। কৃষি, বিনোদন, ডেকোরেটর্স, সাউন্ড সিস্টেম,আলোক শিল্প, রং শিল্প, বিজ্ঞাপন, প্রতিমা, পুজো উপকরণ, ঢাকী, পুরোহিত, পটুয়া শিল্প, পুস্তক ম্যাগাজিন, নাটক -যাত্রা -থিয়েটার শিল্প , মিষ্টান্ন শিল্প, খাদ্যশিল্প, স্বর্ণশিল্প, বস্ত্র শিল্প, ভ্রমণ শিল্প প্রভৃতি বিভিন্ন বিভাগে বিরাট পরিমাণ অর্থের আদানপ্রদান হয় শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে।
প্রচুর বিতর্ক ও সমালোচনা হয়েছে ,হচ্ছে, হবে শারদোৎসবে লাগামহীন খরচের যথার্থতার প্রশ্ন নিয়ে। দেশের অর্থনীতি নিম্নগতি কিন্তু শারদবাণিজ্য ঊর্ধ্বমুখী। বিশ্ববাজারে টাকার দাম কমা, পেট্রল ডিজেলের দাম লাগাম ছাড়া, মুদ্রস্ফীতি বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বড়ো বড়ো শিল্প বাণিজ্য সংস্থা বাঙালীর শারদোৎসবকে পাখির চোখ করে। Associated Chamber of Commerce and Industry of India (ASSOCHAM)-র সাম্প্রতিক সমীক্ষা মতে শারদোৎসবের বাণিজ্যিক বাজার বার্ষিক যৌগিক ৩৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুজো উপলক্ষে যথেচ্ছ খরচ যদি নিয়ন্ত্রিত করা হয় তাহলে বাংলার সর্বস্তরের ব্যবসা বাণিজ্যের উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। বাংলার অর্থনীতির বেশ কয়েকটি বিভাগ শারদোৎসবের উপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। যদি সব কিছু ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় তাহলে অনুসারী শিল্পের উপরেও পড়বে ঋণাত্মক প্রভাব। তাছাড়া শারদোৎসবের সাথে পেশাগতভাবে যুক্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবার ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলার অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে প্রচুর বেকারত্বের সৃষ্টি হবে।
অপরপক্ষে শারদোৎসব উপলক্ষে আর্থিক লেনদেন এক সামাজিক বিনিয়োগ। যা সামাজিক বন্ধনকে মজবুত করে। সাংস্কৃতিক বিনিয়োগও বটে, শারদোৎসবের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ভাবের আদানপ্রদান হয়। ‘শারদোৎসব অভিযোজন’ এক অর্থে অদ্বিতীয়—জাতি,ধর্ম,বর্ণ,ভাষা,খাদ্য, সংস্কৃতির ঊর্ধ্বে একতার প্রতীক। বাংলার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবছর রাজ্যের প্রতি পুজো কমিটিকে পঁচাশি হাজার টাকা করে।
দুয়ারে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদোৎসব। কিন্তু শরৎ আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। আরজি কর কাণ্ডের অভিঘাতে কলকাতা শহর থেকে মফস্বল কোথাও সেভাবে শারদোৎসবের উত্তাপ অনুভূত হচ্ছে না। বরং প্রতিবাদের আগুন ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের নানা প্রান্তে। রাজ্যের বাইরেও দেশ, বিদেশে আন্দোলনের টেউ আছড়ে পড়ছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনের পথ ছেড়ে সকলকে উৎসবে সামিল হতে আবেদন করলেও এখনও পর্যন্ত তাঁর ডাকে সেভাবে সাড়া মিলেনি। নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে উত্তরোত্তর প্রতিবাদসভা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। বেশ কিছু পুজো কমিটি দুর্গাপুজো উপলক্ষে সরকারী অনুদান পঁচাশি হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে।
জুনিয়র ডাক্তাররা ছাড়াও রাজ্যব্যাপী আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা ন্যায় বিচারের দাবিতে আজ পথে। গণ জাগরণ আজ গণ আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। প্রতিবাদ সভা, মিছিলে হাজার হাজার মানুষ সামিল হলেও দোকানে বা শপিং মল মাছি তাড়াচ্ছে গরিয়াহাট মার্কেট থেকে নদিয়ার গ্রামের কাপড়ের দোকান— সর্বত্র একই চিত্র। রাজ্য সরকার ও আন্দোলরত জুনিয়র ডাক্তারদের দড়ি টানাটানিতে এই চলমান অচলাবস্থা স্তিমিত কবে হবে বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশ প্রশাসন, সরকার, সিবিআই, বিচার ব্যবস্থা সব মিলিয়ে এক ধোঁয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ।বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মত, দুর্গোৎসবেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যদি পড়ে তবে বাংলার চলমান অর্থনীতির ভিত্তি জোর ধাক্কা খাবে। শারদোৎসবের সর্বজনীন বাণিজ্যিক রূপ ব্যহত হবে।