অভূতপূর্ব প্রবল বৃষ্টিপাতের প্রকোপে বিধ্বস্ত জাপানের ইশিকাওয়া অঞ্চল। সোমবার বিকেল অবধি পাওয়া খবর অনুযায়ী এই বৃষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭ জন, নিখোঁজ অনেকেই। পুরোদমে চলছে উদ্ধারকার্য।
শনিবার থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে ইশিকাওয়া অঞ্চলে। ওয়াজিমা শহরে গত ৭২ ঘণ্টায় ৫৪০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। পুরোনো তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, এযাবৎ একটানা এতটা বৃষ্টি কখনও হয়নি।
প্রসঙ্গত, এই বছরের শুরুতেই ইশিকাওয়া অঞ্চলে বিধ্বংসী এক ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে তার তীব্রতার পরিমাপ ছিল ৭.৫। সেই ভূমিকম্পের ফলে সুনামি, অগ্নিকাণ্ড হয়; ভেঙে পড়ে বাড়িঘর। তার জের সামলে উঠতে না উঠতেই আরেক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে ইশিকাওয়া।
জাপানের মুখ্য ক্যাবিনেট সচিব ইওহিমাশা হায়াশি নিহতদের পরিবারের জন্য শোকপ্রকাশ করেছেন। জনগণের উদ্দেশে তিনি জানিয়েছেন, দুর্গতদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরকার সর্বতোভাবে চেষ্টা করছে।
একটি সাংবাদিক বিবৃতিতে তিনি জানান, ‘আজ সকাল ৮টা অবধি পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা জানতে পেরেছি, ৭ জন নিহত, ২ জন নিখোঁজ। আরও ৮ জন, যাঁদের সঙ্গে এই বিপর্যয়ের যোগাযোগ থাকতে পারে, তাঁদের কোনওরকম খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।’
হায়াশির বক্তব্য, পুলিশ, দমকল বিভাগ এবং আত্মসুরক্ষা বাহিনী জোরদার তল্লাশি, উদ্ধার এবং ত্রাণ অভিযান চালাচ্ছে।
সুজু এবং ওয়াজিমা শহরে উদ্বাসন কেন্দ্রে অতি প্রয়োজনীয় সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ (প্রিফেকচার) থেকে ২,০০০ জনের খাওয়ার মতো ইনস্ট্যান্ট রাইস, ২ লিটারের ১,৫০০টা বোতল, চা এবং আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় সরবরাহ সুজু শহরে রবিবার পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হায়াশি।
হায়াশি আরও জানিয়েছেন, ‘নোতো উপদ্বীপের ভূমিকম্পের ধাক্কা থেকে এই অঞ্চল এখনও সামলে ওঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিপর্যয়গ্রস্ত অঞ্চলের পরিস্থিতি তলিয়ে দেখা এবং সেই অনুযায়ী বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য আমরা স্থানীয় সরকারের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করব।’
যদিও রবিবার সকালেই জাপানের আবহাওয়া দপ্তর ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের বিভিন্ন জায়গায় প্রবল বর্ষণ কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল, তবুও স্থানীয় প্রশাসন থেকে গৃহবাসীদের বন্যা ও ধ্বসের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিডাও বৃষ্টিবিধ্বস্ত অঞ্চলে সবরকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন।