• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

নবম শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশন সংশোধনের বিপুল ফি নিয়ে পর্ষদকে চিঠি প্রধান শিক্ষকদের

নবম শ্রেণিতেই মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশনের কাজ হয়। সেই রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে যদি ভুল থাকে, তা ঠিক করতে ১০০০ টাকা ফাইন দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। গত বছর এই ঘোষণা হওয়ার পর বিতর্কও তৈরি হয়েছিল।

নবম শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশন সংশোধনের জন্য যে ১০০০ টাকা ফি ধার্য করা রয়েছে, এবার তা কমানোর জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে চিঠি দিলেন প্রধান শিক্ষকরা। এই নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে চিঠি দিয়েছে ‘অ্যাডভান্স সোসাইটি অফ হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস’। অন্য দিকে, নবমের রেজিস্ট্রেশনের জন্য বৃহস্পতিবার বাড়তি সময় বাড়াল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

সংসদের ভুলের জন্য কেন পড়ুয়াদের উপর আর্থিক বোঝা চাপানো হচ্ছে? সংশ্লিষ্ট চিঠিতে এই নিয়ে এই সংগঠনের তরফ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ভুল সংশোধনের জন্য একজন পড়ুয়ার পক্ষে কীভাবে ১০০০ টাকা দেওয়া সম্ভব? তা নিয়েও শিক্ষক মহলের একাংশ প্রশ্নও তুলেছেন।

সংগঠনের তরফে দেওয়া চিঠিতে অভিযোগের সুরে লেখা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে নথিভুক্তিকরণের মূল শংসাপত্র পাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, বিদ্যালয়ের অফলাইনে তথ্য সঠিক থাকা সত্ত্বেও আপনাদের (পর্ষদের) যে ভেরিফিকেশন লিস্ট আপনারা দিয়েছেন, তাতে ভুল রয়েছে। সেজন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কোনওভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে, প্রতিটি বিদ্যালয়ের অন্ততপক্ষে একটি দু’টি করে ভুল থেকে গিয়েছে।

এই চিঠিতে পর্ষদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, ‘আপনারা এবারে কোনওরকম ক্যাম্প করেননি। প্রিন্ট করে দেননি। সব খরচ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করেছে। তা সত্ত্বেও এক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর আবার আর্থিক বোঝা চাপাচ্ছেন?
সর্বশিক্ষা মিশনের যে লক্ষ্য তার বিপরীত সিদ্ধান্ত আপনারা নিয়ে চলেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ক্ষেত্রে আমরা এই ধরনের বৈপরীত্য লক্ষ্য করিনি’।

সেখানে আরও লেখা হয়, ‘যেখানে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন দরদী প্রকল্প চালু করেছেন, সেখানে আপনাদের এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে বিপরীত। অধিকাংশ বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে মাত্র ২৪০ টাকা ফিস নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করতে হয়। একটি ভুল কারেকশন করার জন্য যদি ৫০ টাকার (আগের নির্ধারিত ফিস) পরিবর্তে ১০০০ টাকা জরিমানা দিতে হয়, তাহলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের।

সংগঠনের তরফ থেকে পর্ষদের কাছে আবেদন করা হয়েছে যে, যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীর নথিভুক্তিকরণের শংসাপত্রে ভুল রয়েছে, সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে শুধুমাত্র জন্ম সার্টিফিকেট এবং রেজিস্ট্রেশন পূরণের অফলাইন কপি দেখে যাতে বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীরা পেতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।’

এদিকে এদিন নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের জন্য আরো বাড়তি সময় বরাদ্দ করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা থেকে ৩০ তারিখ দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এদিন এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করেছে পর্ষদ। পর্ষদ জানিয়েছে, এই মেয়াদের মধ্যে স্কুলগুলোকে যে পড়ুয়ারা বাকি রয়ে গিয়েছে, তাদের লেট ফি-সহ রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। অবশ্য যে স্কুলের আগে থেকেই সব পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে তাদের আর এতে অংশগ্রহণ করতে হবে না। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে এডিট অপশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। যাতে কোনও ধরনের সংশোধন করতে সুবিধা হয়।

প্রসঙ্গত, নবম শ্রেণিতেই মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশনের কাজ হয়। সেই রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে যদি ভুল থাকে, তা ঠিক করতে ১০০০ টাকা ফাইন দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। গত বছর এই ঘোষণা হওয়ার পর বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, ভেরিফিকেশন করে ফাইনাল সাবমিট করে দেওয়ার পরও এখনও কিছু ছাত্র-ছাত্রীর সংসাপত্রে ভুল রয়ে গিয়েছে।
এই নিয়েই এবার পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে চিঠি দিলেন প্রধান শিক্ষকরা।