• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

রাণাঘাটে ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন

বন্ধ করার আগে দোকানের সামনে ঝাঁট দিচ্ছিল এক ব্যবসায়ী। দুষ্কৃতীরা তাকে গুলি করে খুন করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তার নাম হরলাল দেবনাথ (৫৫)।

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

বন্ধ করার আগে দোকানের সামনে ঝাঁট দিচ্ছিল এক ব্যবসায়ী। দুষ্কৃতীরা তাকে গুলি করে খুন করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তার নাম হরলাল দেবনাথ (৫৫)। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রাণাঘাট থানার কলাইঘাটা নাথপাড়া এলাকায়।

এদিন রাত সাড়ে দশটা নাগাদ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই ব্যবসায়ীকে প্রথমে রাণাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমােরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে রাত সাড়ে বারােটা নাগাদ তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিহত হরলালকে তাদের দলের কর্মী বলে দাবি করেছে তৃণমূল এবং বিজেপি। তার স্ত্রী’র অবশ্য বক্তব্য, ‘তিনি কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না’।

পুলিশি সুত্রে জানানাে হয়েছে, পুরানাে কোনও শত্রতার কারণে ওই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কারোর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করা হয়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাত দশটা নাগাদ দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি চলছিল। সেই সময় হরলাল দেবনাথ ছাড়াও তার স্ত্রী এবং ভাই মহেন্দ্র দেবনাথ সেখানে ছিলেন। দুই যুবক দোকানে আসে। একজন দোকানে সিগারেট, চানাচুর কিনছিল। অপরজন রাস্তার বিপরীতে দাঁড়িয়ে মােবাইলে কারাের সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত ছিল। দোকানের সামনে ঝাঁট দিচ্ছিল হরলাল। সেই সময় পিছন দিক থেকে গুলি চালিয়ে বিনা বাধায় মাঠের মধ্যে দিয়ে চম্পট দেয় ওই দুই যুবক।

তার স্ত্রী বলেন, আমি শব্দ শুনে বাইরে এসে দেখি হাতে ঝাটা নিয়ে দাঁড়িয়ে কাতরাচ্ছে। তাকে ওই অবস্থায় ধরে ফেলি শরীরের পিছন দিকে একটা জায়গা থেকে রক্ত ঝরছিল আশপাশের লােকজন এসে তার মাথায় জল দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী কোনও দল করত না। তাকে কেন খুন করা হল তা, বুঝতে পারছি না।

রাণাঘাট ১ নম্বর ব্লকের হবিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাইঘাটা নাথপাড়ায় তাদের বাড়ি। স্ত্রী ছাড়াও বাড়িতে রয়েছে এক ছেলে এবং এক মেয়ে। ছেলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তার ভাই মহেন্দ্র দেবনাথ বলেন, আমি সেই সময় দোকানে দাঁড়িয়েছিলাম। ওদের দোকানে আসতে দেখেছি। ওরা দুজন আমার অপরিচিত। ওদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম কোথা থেকে এসেছে। ওরা বলেছিল, আঁইশতলা থেকে। ওরা দোকানে জিনিস কিনছে দেখে আমি বেরিয়ে আসি। কয়েক মিনিটের মধ্যে একটা শব্দ শুনতে পাই। প্রথমে ভেবেছিলাম কেউ কালিপটকা ফাটাচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে জানতে পারি দাদাকে গুলি করে খুন করা হয়েছে।

তিনি এও বলেন, ‘আমার দাদা মাঠে ময়দানে নেমে রাজনীতি করত না। কিন্তু, লােকসভা নির্বাচনের পর থেকে আমরা বিজেপি করছি’। খুনের ঘটনার পর থেকে তাদের বাড়িতে শাসক এবং বিরােধী দলের নেতারা হাজির হয়েছিলেন। রাণাঘাট ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তাপস ঘােষ বলেন, পঞ্চায়েত ও লােকসভা নির্বাচনে দলের হয়ে হরলালবাবু বাড়ি বাড়ি প্রচার করেছেন। ওই বুথের দশ জনের কমিটি রয়েছে, তার সদস্য ছিলেন। বিজেপি রাজনৈতিক ফয়দা তুলতে এখন তাদের কর্মী বলে দাবি করছে। পাল্টা অভিযােগ করে দক্ষিণ জেলা বিজেপি সভাপতি মানবেন্দ্র রায় বলেন, ‘হরলাল দেবনাথ আমাদের দলের দীর্ঘদিনের কর্মী। অযােধ্যা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এলাকায় তার প্রভাব ছিল। সেই কারণে তাকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা খুন করেছে। এখন তাদের কর্মী বলে দাবি করছে। এলাকার মানুষ সব জানেন।