মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভাষায়, প্রত্যেক মানুষের দুয়ারে উন্নয়নমূলক সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়াই দলের প্রধান কর্তব্য। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের ‘প্রাকটিক্যাল’ রাজনৈতিক ভাবনাচিন্তাও সে কথাই বলে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এবং অভিষেকের আদর্শ অনুসরণ করতে বদ্ধপরিকর প্রত্যেক দলীয় নেতানেত্রীরা। এবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর কণ্ঠেও একই সুর। দলে থেকেও জনস্বার্থে কাজ না করলে সেই নামের তালিকা জমা দেওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাজে, গুরুগম্ভীর কণ্ঠে দলীয় নেতা-কর্মীদের এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন নারায়ণ।
বুধবার বারাসত রবীন্দ্র ভবনে জেলার উন্নয়ন নিয়ে জেলার ১৯৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানদের নিয়ে এক বৈঠকে সামিল হয়েছিলেন নারায়ণ গোস্বামী। সেখানেই তিনি সরাসরি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, ‘হয় কাজ করুন, নয় পদ ছাড়ুন। আর যদি না ছাড়েন তবে আমি জেলাশাসকের থেকে আপনাদের নামের তালিকা নিয়ে সোজা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে জমা দেব।’
প্রসঙ্গত, এদিনের বৈঠকে নির্দিষ্ট আলোচনার সাপেক্ষে রূদ্রমূর্তি ধারণ করে এই ধরণের মন্তব্য করেন নারায়ণ। এই বৈঠকে এক একটি পঞ্চায়েত ধরে ধরে বিশ্লেষণ করেন নারায়ণ গোস্বামী। সেই মুহূর্তেই নারায়ণ নির্দিষ্ট হিসাবে লক্ষ্য করেন, জেলার ১৪ থেকে ১৫টি পঞ্চায়েতের প্রধান তাঁদের পঞ্চায়েতের বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিষয়টি উপলব্ধি করেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘আগামী ১৫ দিনের মধ্যে যদি এই টাকা ঠিকঠাক করে খরচ করতে না পারেন তবে পদ ছেড়ে দিন। অন্য কাউকে সুযোগ দিন। এটা মনে করার কোনও কারণ নেই আপনি না পারলে আরেকজন পারবে না’!
তাঁর আরও বক্তব্য, ‘কেন্দ্রের এই তীব্র বঞ্চনা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বাংলার উন্নয়নের জন্য কোনও খামতি রাখছেন না। তিনি যদি কষ্ট করে টাকার ব্যবস্থা করতে পারেন তবে কেন সেই টাকা যথাযথ ভাবে উন্নয়ন কার্যে ব্যবহার করা হবে না? উন্নয়নের সঙ্গে কোনো আপোষ নয়’। তবে সত্যিই কি নিজ হুঁশিয়ারি বাস্তবায়িত করবেন নারায়ণ? এ
প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘আগামী ১৫ দিন পর জেলাশাসকের থেকে কাজ করতে না পারা এই পঞ্চায়েত প্রধানদের নামের তালিকা নিয়ে সোজাসুজি মুখ্যমন্ত্রীর কাছেই জমা দেবেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রী বিচার করে যা পদক্ষেপ করার নিশ্চয়ই করবেন।’ পূর্বেও পরিষেবা প্রদানে খামতি নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে ছিলেন নারায়ণ। দলীয় নেতা-কর্মীদের ‘সমঝে’ চলার বার্তা দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, ‘লেজ মোটা হলে কেটে দেবেন অভিষেক’। এবার নিজ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে এবং উন্নয়ন কার্যে ব্যাঘাত ঘটলে পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিলেন নারায়ণ গোস্বামী।