অসহিষ্ণুতা, গণপিটুনির মতাে ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনমাস আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে চিঠি লিখেছিলেন দেশের ৪৯ জন বুদ্ধিজীবী । সেই তালিকায় নাম ছিল রামচন্দ্র গুহ, শ্যাম বেনেগল, অনুরাগ কাশ্যপ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপর্ণা সেনদের মত বুদ্ধিজীবীরা। বিহারের এক আইনজীবীর অভিযােগের ভিত্তিতে চিঠিতে স্বাক্ষরকারী সমস্ত বুদ্ধিজীবীর বিরুদ্ধেই এফআইআর হয়েছে বলে জানা যায় গত শুক্রবার। আর এই ঘটনা নিয়ে ফের সরব হলেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহ থেকে ইতিহাসবিদ রােমিলা থাপার-১৮০ জন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিখ্যাত মানুষ স্বাক্ষর করে লিখলেন, ‘আমাদের চুপ করানাে যাবে না’। ওই চিঠিতে নাসিরউদ্দিন-সহ বাকিরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে লেখা খােলা চিঠি কী করে রাষ্ট্রদ্রোহ হতে পারে?’ তাদের বক্তব্য, ‘মানুষের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করতে আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। এটা বিরুদ্ধ স্বর দমন করা নিপুণ ষড়যন্ত্র’। লেখক অশােক বাজপেয়ী, জেরি পিন্টো, শিক্ষাবিদ ইরা ভাস্করের মতাে ১৮০ জন বিখ্যাত মানুষের স্বাক্ষর রয়েছে এই প্রতিবাদপত্রে।
তারা ওই চিঠিতে খােলাখুলি অপর্ণা-সেমিত্রদের সমর্থন জানিয়েছেন। স্পষ্টই বলেছেন, আইনের অপব্যবহার করে তাদের সহকর্মীদের হেনস্থা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা বুদ্ধিজীবীদের চিঠি নিয়ে বিহারের মুজফফরপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সূর্যকান্ত তিওয়ারির কাছে একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন সুধীর কুমার ওঝা নামের এক আইনজীবী।
সেই পিটিশনকে ঘিরে একটি অর্ডার পাস করেন ম্যাজিস্ট্রেট। ওই অর্ডারের ভিত্তিতেই সদর পুলিশ স্টেশনে ৪৯ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন সুধীরবাবু। নিজের অভিযােগে সুধীরবাবু বলেছেন, ‘এই চিঠি লিখে তাঁরা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন করেছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমি এফআইআর করেছি’। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে আইপিসির একাধিক ধারায় অভিযােগ দায়ের হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, অস্থিরতা তৈরি করা, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত, শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টার মতাে অভিযােগ।