• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে গভীর ‘ষড়যন্ত্র’ কলতান প্রেপ্তার প্রসঙ্গে বললেন সুজন

কলতানের সংগঠন ডিওয়াইএফআই, সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই এবং মহিলা সংগঠন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি অবশ্য তাদের যৌথ বিবৃতিতে 'এআই' ব্যবহার বা ষড়যন্ত্রের কথা বলেনি।

গ্রেপ্তার হয়েছেন সিপিএম যুবনেতা কলতান দাশগুপ্ত। কিন্তু যে অভিযোগে কলতান দাশগুপ্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন সেই অভিযোগের সঙ্গে কলতান এর পরিচিত চারিত্রিক গঠনকে অনেক সিপিএম নেতাই মেলাতে পারছেন না। সিপিএমের তরফে এই গ্রেপ্তারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ষড়যন্ত্র’ বলা হয়েছে। তবে কলতানের এই গ্রেপ্তারি এখন সিপিএম নেতাদের কাছে সবচেয়ে বেশি আলোচ্য বিষয়। কারণ যে যুবনেতার মুখে সারাক্ষণ হাসি লেগে থাকত। যাকে রাগতে খুব একটা কেউ দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না। কারো সঙ্গে উঁচু গলাতেও তিনি খুব একটা কথা বলতেন না।

এহেন কলতান ‘ফাইট টু ফিনিশ’ উচ্চারণ করতে পারেন এ কথাটাই বিশ্বাস করতে পারছেন না বাম নেতারা। কারণ, কলতান ফেসবুকে নিয়মিত প্রেমের কবিতা লিখতেন। কখনও সেই লেখার প্রেক্ষাপটে থাকত মেট্রোয় পাশাপাশি বসা যুগল, কখনও বৃষ্টির বো ব্যারাকের রাস্তায় এক ছাতার নিচে হেটে যাওয়া তরুণ-তরুণী। কলতান বিপ্লবকে নিয়ে কোনওদিন কবিতা লেখেননি। লিখেছেন রোমান্টিকতাকে পাথেয় করে। যে কলতান কোনও দিন রাগত না, উপরন্ত কেউ রেগে গেলে তাকে থামাতো। জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থানে হামলার অডিও ক্লিপ এর সঙ্গে, সেই কলতান এর নাম জড়ানোয় দলের অনেকেই হতবাক হয়েছেন।

যদিও সিপিএমের অনেকেই ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছেন ওই কন্ঠস্বর এর সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে কলতানের কণ্ঠস্বরের। যদিও কলতানও সরাসরি বলেননি, ওই কণ্ঠস্বর তাঁর বা তাঁর নয় কিনা। তিনি কিছু না বললেও সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী দাবি করেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ( আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যবহার করে গভীর ‘ষড়যন্ত্র’ করা হয়েছে। সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার বলেছেন, কুণাল বিভিন্ন লোককে ওইভাবে ‘ফোন করিয়ে’ এইসব করেন। এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন, মহম্মদ সেলিমও। কলতানের গ্রেপ্তারির ব্যাপারে তিনি ভীমা করেগাঁও প্রসঙ্গ টেনে লিখেছেন, ‘ভীমা করেগাঁও মামলায় বিজেপি সরকার যে কাজ করেছে, পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার সেই পথই অনুসরণ করছে।’

কলতানের সংগঠন ডিওয়াইএফআই, সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই এবং মহিলা সংগঠন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি অবশ্য তাদের যৌথ বিবৃতিতে ‘এআই’ ব্যবহার বা ষড়যন্ত্রের কথা বলেনি। এও বলেনি যে অডিও ক্লিপের কণ্ঠস্বর কলতানের নয়। তাঁদের বক্তব্য আন্দোলন ভাঙার জন্যই কলতানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন কলতানের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদের সারা রাজ্য জুড়ে থানা অভিযান হবে। জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনায় হামলার আশঙ্কা সংক্রান্ত একটি অডিও (যার সত্যতা যাচাই করেনি দৈনিক স্টেটসম্যান) শুক্রবারই প্রকাশ্যে এনেছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। এরপরেই বিধাননগর পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন সিপিএমের যুব নেতা কলতান।

জানা যায়, সাউথ সিটি কলেজে পড়ার সময় থেকেই এসএফআইয়ে যোগ দেন কলতান। তারপর যুক্ত হন যুব সংগঠনে। সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মী তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলতানের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। তিনিও ডিওয়াইএফআই কলকাতা জেলা সম্পাদকমন্ডলী সদস্য। আনুষ্ঠানিকভাবে বাম নেতারা কলতানের গ্রেফতারিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবেই দেখছেন।