বাংলাদেশে মাসখানেক আগেই ঘটে গিয়েছে গণঅভ্যুত্থান। পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তৈরি হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যার মুখ্য উপদেষ্টা হয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং সমাজসেবক মহম্মদ ইউনূস। বর্তমানে তিনিই মূলত সরকার পরিচালনা করছেন। ইউনূসের সঙ্গে এবার দেখা করতে এসেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকরা। উল্লেখ্য, সরকার বদলের পর ঢাকায় ওয়াশিংটনের তরফ থেকে এই প্রথম কোনও শীর্ষস্তরের সরকারি সফর করা হল।
এই সফরে প্রতিনিধি দলের দায়িত্বে রয়েছেন ডোনাল্ড লু। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সংস্থার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে রয়েছেন। এছাড়াও এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন মার্কিন বাণিজ্য দপ্তর, পররাষ্ট্র দপ্তর, অর্থ দপ্তর এবং ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বা ইউএসএআইডি-র উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। তাঁরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন, পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিন এবং আর্থিক উপদেষ্টা সালেউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে স্থির হয়েছে। এর আগে এই দলটি নয়া দিল্লিতে সফরে ছিল। গত শনিবার সকালে তাঁরা ঢাকায় পোঁছান। ঢাকাকে কী পরামর্শ দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সেই অপেক্ষায় সবাই।
এর মধ্যে বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন সাধারণ জনগণ। উদ্দেশ্য, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হওয়া হত্যালীলা থামানো। এমনকী, দূতাবাসের সড়কের নাম বদলে দিলেন বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীরা। কিশোরী ফেলানি খাতুন,যে প্রাণ হারায় সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলিতে, তার নামেই নাম রাখার সিদ্ধান্ত নিল তারা। ‘শহিদ ফেলানি সড়ক’ নামের বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হল ভারতীয় দূতাবাসের সামনে।
এই বিক্ষোভ থেকে উত্তেজনা ছড়াতে পারে, এমন তথ্য ছিল গোয়েন্দাদের কাছে। ফলে, বারিধারা অঞ্চলে ভারতীয় দূতাবাসের বাইরে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো ছিল। মোতায়েন করা হয়েছিল সেনাদেরও।
এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন আহমেদ ইশহাক। তিনি কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। তাঁর বক্তব্য, “বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু বিদেশ নীতির কারণে সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করা হচ্ছে। নতজানু বিদেশ নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।” পুলিশ বিক্ষোভকারীদের আটকানোয় স্লোগান ওঠে, ‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা!’ এই আবহে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন অনেকে।