আর্থিক তছরুপ মামলায় ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের প্রধান তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লার বিরুদ্ধে ফের আদালতের দ্বারস্থ ইডি। ইডি শ্রীনগরের এক আদালতে একটি আবেদন দাখিল করেছে যাতে জেকেসিএ অর্থ পাচার মামলায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লার এবং অন্যদের বিরুদ্ধে দুটি নতুন ফৌজদারি অভিযোগ যুক্ত করা হয়। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে শুরু হচ্ছে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ইডির এই পদক্ষেপ নতুন করে চাপ সৃষ্টি করল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর উপর । জম্মু ও কাশ্মীর আদালতের অনুমতি পেলে ফারুকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করবে কেন্দ্রের আর্থিক দুর্নীতি দমন সংস্থা।
জম্মু ও কাশ্মীর ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে দুর্নীতি ও আর্থিক তছরুপে নতুন দুটি অভিযোগ এনে ফারুকের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন জানিয়েছে ইডি। সূত্রের খবর , প্রধান জেলা ও দায়রা জজের আদালতে আর্থিক সংক্রান্ত মামলায় আইপিসি ধারা ৪১১ অর্থাৎ অসাধুভাবে চুরি করা সম্পত্তি গ্রহণ এবং ৪২৪ অর্থাৎ অসৎ উপায়ে সম্পত্তি অপসারণ বা গোপন করা – এই দুই ধারা যুক্ত করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে গত মাসে ফারুক আবদুল্লার বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছিল ইডি। তবে গত ১৪ আগস্ট এজেন্সির তরফে আনা সব অভিযোগ খারিজ করে দেয় জম্মু ও কাশ্মীর হাই কোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব কুমার জানান, যে সব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায় না। এই পরিস্থিতিতে দণ্ড সংহিতার এই দুই ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ইডির এই আবেদন আদালতে গ্রাহ্য হলে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে সমস্যায় পড়বেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। কারণ অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে নির্বাচনী ময়দানে রয়েছে ৮৬ বছর বয়সী ফারুক আবদুল্লার দল ন্যাশনাল কনফারেন্স।
ইডির এই মামলাটি সিবিআইয়ের দাখিল করা ২০১৮ সালের চার্জশিটের উপর ভিত্তি করে। সিবিআই চার্জশিটে ২০০২ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে রাজ্যে খেলাধুলার প্রচারের জন্য বিসিসিআই প্রদত্ত অনুদান থেকে জেকেসিএল-এর তহবিলে ৪৩.৬৯ কোটি টাকার অপব্যবহার করার অভিযোগ আনে ।ইডি এর আগে বলেছিল যে জেকেসিএ ২০০৫ থেকে ২০০৬ এবং ২০১১ থেকে ২০১২ আর্থিক বছরে তিনটি আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিসিসিআই থেকে ৯৪. ০৬ কোটি টাকা পেয়েছে।
তবে নির্বাচনের মুখে ইডির এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে দাবি করছে বিরোধীরা। এবার নির্বাচনে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াইয়ে নামছে কংগ্রেস, তার আগেই ইডির এই তৎপরতাকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিরোধীরা।বিরোধীদের অভিযোগ, জম্মু ও কাশ্মীরে ১০ বছর পর হতে চলা নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে বিজেপি। কারণ উপত্যকাবাসী এবার বিজেপিকে যোগ্য জবাব দেবে। তা আন্দাজ করতে পেরেই এজেন্সিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে শাসকদল।