মধ্যস্থতার অভিযোগ নিয়ে এবার বিস্ফোরক জুনিয়র ডাক্তারেরা। কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া নিয়ে কোনোরকম মধ্যস্থতা যে কুনাল ঘোষ করেননি, সেটা সাংবাদিক বৈঠক করে স্পষ্ট করে দিলেন তাঁরা।
মঙ্গলবার সন্ধেবেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুনাল ঘোষ সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানান, তিনি যে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত, তার অফিসে চার আন্দোলনকারী চিকিৎসক যান, এবং ‘ঘটনাচক্রে’ তাঁর সঙ্গে ওই জুনিয়র ডাক্তারদের দেখা হয়ে যায়, যেটা নিয়ে ‘কোনো কোনো মহল অকারণ বিতর্ক ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে’।
তিনি আরও জানান, “আজ সকালে আন্দোলনকারীদের তরফে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁদের তরফে বলা হয় নির্দিষ্ট কিছু কারণে লালবাজারের ধরণা এগোন ঠিক হবে না। তাঁরা আজই এখনই নগরপাল ইস্তফা না দিলে উঠবেন না, এই দাবিতে অনড় থাকবেন না। পরে ইস্তফা দিলেও হবে। আজ শুধু নগরপালের হাতে স্মারকলিপি দিয়ে দেখা করতে চান। তারপর রাজপথ থেকে ধর্ণা তুলে নেবেন।”
এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, যে তাঁরা কুনাল ঘোষের মধ্যস্থতায় নগরপালের সঙ্গে কথোপকথন চালিয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতেই জুনিয়র ডাক্তাররা সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পরিষ্কার করে দেন, তাঁদের আন্দোলনে সম্পূর্ণ ‘অরাজনৈতিক’।
অভিনয় জগতের পরিচিত মুখ এবং চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দী জুনিয়র ডাক্তারদের মুখপাত্র হিসেবে জানান, “এটা একেবারেই মিথ্যা। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে কোনওরকমের কোনও যোগাযোগ করিনি। আমরা যেটুকু করেছি, তা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে যে ডিসিশন হয়েছে, সেটাই করেছি। কারোর কোনও মধ্যস্থতা এখানে ছিল না। গত আন্দোলনেও ছিল না, আগামীতেও থাকবে না। এটা আমাদের স্ট্যান্ড। এই আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। এই ভাবেই আন্দোলন চলবে।”
ডাক্তাররা সাংবাদিক সম্মেলনে আরও জানান, “আন্দোলনের যা মূল সুর, তা অরাজনৈতিক। সংবাদমাধ্যমে যা উঠে এসেছে, তা আন্দোলনের মূল সুরের সমর্থক নয়।… এক সংবাদমাধ্যমে আমাদের ছবি দেখানো হয় এই বলে যে, আমরা নাকি আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি হিসাবে মধ্যস্থতা করতে এসেছি। এটা মিথ্যা।”
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় পুলিশি অব্যবস্থা, তদন্তে গাফিলতি ও বিলম্ব, ১৪ আগস্ট রাতে আরজি করে বহিরাগত দুষ্কৃতিদের আক্রমণ ও ভাঙচুর ইত্যাদি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২ সেপ্টেম্বর লালবাজার অভিযানের ডাক দেন জুনিয়র ডাক্তাররা, যার দাবি ছিল নগরপাল বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ। ৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে আন্দোলনরত ডাক্তারদের দাবি মেনে পিছু হটে পুলিশ, সরে যায় ব্যারিকেড। নগরপালের কাছে ডেপুটেশন জমা দেন ২২ জন জুনিয়র ডাক্তারের এক প্রতিনিধি দল, যার মধ্যে দিয়ে অবস্থান-বিক্ষোভ শেষ হয়।