• facebook
  • twitter
Thursday, 19 September, 2024

আসতে চলেছে বন্দেভারতের নতুন এসি ট্রেন

ভারতের রেলভ্রমণের গৌরবান্বিত ইতিহাসের মুকুটে যুক্ত হল এক নতুন পালক!

শীঘ্রই আসতে চলেছে বন্দে ভারতের স্লিপার ট্রেন, যা জানা যায় রেল মন্ত্রকের একটি সাম্প্রতিক ঘোষণা থেকে। কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেড (বিইএমএল)-এর বেঙ্গালুরু শাখায় তৈরি এই স্লিপার কোচগুলির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী ভি সোমান্ন। সম্ভবত ডিসেম্বর মাস থেকেই যাত্রীরা এর সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

ভারতে প্রথম তৈরি হওয়া এই বিশেষ ট্রেনগুলি সৌন্দর্যের সঙ্গে কার্যকারিতার এক অনন্য মেলবন্ধন ঘটিয়ে রেলযাত্রার ক্ষেত্রে আনতে চলেছে এক অভূতপূর্ব বিপ্লব। এই ট্রেনে ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদান এবং উপকরণের অগ্নিসুরক্ষার মান রীতিমতো উচ্চস্তরের। পরিষেবা, সুযোগ-সুবিধা, আভ্যন্তরীণ সজ্জা– সবদিক থেকেই বন্দে ভারত ট্রেনের এই নয়া সংযোজন রেলযাত্রীরা উন্নত ইউরোপীয় রেলযাত্রার সমমানের অভিজ্ঞতা লাভ করবেন, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।

অস্টেনাইটিক স্টেনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি এই মজবুত স্লিপার কোচগুলিতে রয়েছে ইএন ৪৫৫৪৫ মানের অগ্নিসুরক্ষা ব্যবস্থা, যার ঝুঁকির স্তর: ০৩। এরোডায়নামিক বহির্ভাগ, মডিউলার প্যান্ট্রি, বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য বার্থ এবং টয়লেট, যাত্রীদের জন্য স্বয়ংক্রিয় দরজা, জিএফআরপি প্যানেলসহ সেরার সেরা অভ্যন্তরসজ্জা, যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য দুর্ঘটনারোধী নানা ব্যবস্থা, সেন্সর বসানো আন্তর্যোগাযোগের জন্য দরজা, অন্তিম দেওয়ালে রিমোটচালিত অগ্নিরোধী দরজার উপস্থিতি, দুর্গন্ধমুক্ত টয়লেট ব্যবস্থা, চালকদলের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা, প্রথম শ্রেণির কোচে উষ্ণ জলের শাওয়ারের সুবিধা, ইউএসবি চার্জিংয়ের ব্যবস্থা সমেত ইন্টিগ্রেটেড পঠনপাঠনের আলো, সর্বসাধারণের জন্য ঘোষণার ব্যবস্থা এবং ‘ভিজুয়াল ইনফরমেশন সিস্টেম’, আধুনিক নানা সুযোগসুবিধা– এত কিছুর সমন্বয়ে বন্দে ভারতের স্লিপার ট্রেন আক্ষরিক অর্থেই ভারতের রেল ব্যবস্থাকে আমূল পালটে দিতে চলেছে।

পরীক্ষার সময়ে এই ট্রেনের সর্বোচ গতি ছিলো ১৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টা। তবে, যখন জনসাধারণের জন্য চালানো হবে, তখন সর্বোচ্চ ১৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে এই ট্রেনগুলো চলবে।

প্রতিটি বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনে মোট ১৬টি কোচ থাকবে, বার্থের সংখ্যা মোট ৮২৩। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত তৃতীয় শ্রেণিতে রয়েছে ১১টি কোচ ও ৬১১টি বার্থ, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত দ্বিতীয় শ্রেণিতে রয়েছে ৪টি কোচ ও মোট ১৮৮টি বার্থ এবং শীতাতপনিয়ন্ত্রিত প্রথম শ্রেণিতে রয়েছে মাত্র ১টি কোচ এবং ২৪টি বার্থ।

১৮৫৩ সাল থেকে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় রেল, যার পরতে পরতে মিশে আছে ইতিহাস; যা আষ্ঠেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে আসমুদ্রহিমাচলকে; ভারতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থায় যার অগ্রণী ভূমিকা রীতিমতো অনস্বীকার্য, সেই রেলের নবতম সংযোজন হিসেবে আধুনিকতা এবং আরামদায়ক যাত্রার মিশেলের স্বাদু ককটেল হিসেবে বন্দে ভারতের এই এসি স্লিপার এক জলবিভাজিকা মুহূর্তের সূচনা করছে, এমনটা বলা হলেও অত্যুক্তি হবে না বোধহয়!