• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

আয়ারল্যান্ডের নর্থ চ্যানেল জয় এশিয়ার প্রথম সাঁতারু বর্ধমানের সায়নীর

সপ্তসিন্ধু জয়ের লক্ষ্যে কালনা শহরের বাসিন্দা সায়নী দাস ইংলিশ চ্যানেল, ক্যাটালিনা (ক্যালিফোর্নিয়া), মলোকাই চ্যানেল (হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ), মাত্র চার মাস আগে কুক প্রণালী (নিউজিল্যান্ড) জয় করেন।

সপ্ত সিন্ধুর পঞ্চম সিন্ধু উত্তর আয়ারল্যান্ডের নর্থ চ্যানেল জয় করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার সাঁতারু সায়নী দাস। জলে ঝাঁপ দিয়ে ১৩ ঘন্টা বাইশ মিনিট সময় নিয়ে সাঁতার কেটে জয় করলেন নর্থ চ্যানেল। বরফের মত ঠান্ডা হাড় হিম করা জল, দমকা হাওয়ার সঙ্গে স্রোতের প্রতিকূলে থেকেও প্রথম থেকেই তাঁর দাপট দেখে সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের অনেকেই অবাক হন। এই জয়ের সঙ্গে-সঙ্গে দুটি রেকর্ডও সায়নী জয় করলেন। কোনও মহিলা সাঁতারু হিসাবে তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি প্রথম নর্থ চ্যানেল জয়ী। একই সঙ্গে তিনি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে প্রথম সপ্তসিন্ধুর পাঁচটি চ্যানেল জয় করলেন।

সপ্তসিন্ধু জয়ের লক্ষ্যে কালনা শহরের বাসিন্দা সায়নী দাস ইংলিশ চ্যানেল, ক্যাটালিনা (ক্যালিফোর্নিয়া), মলোকাই চ্যানেল (হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ), মাত্র চার মাস আগে কুক প্রণালী (নিউজিল্যান্ড) জয় করেন। একের পর এক ঐতিহাসিক জয়ের পর পঞ্চম সিন্ধু অর্থাৎ আয়ারল্যান্ডের নর্থ চ্যানেল জয়ের জন্য কোনও বিশ্রাম না নিয়েই কঠিন-কঠোর অনুশীলন চালিয়ে যান। বিদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে তাঁকে কখনও হাড়কাঁপানো ঠান্ডা গঙ্গায়, কখনও বরফ জলেও আইস বাথ করতে দেখা গিয়েছে। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি ও জলের চরিত্রকে বুঝে নিতে সায়নী তাঁর প্রশিক্ষক বাবা রাধেশ্যাম দাস, মা রূপালী দাসকে নিয়ে প্রায় একমাস আগে সেখানে রওনা দেন। নির্ধারিত সময়ের প্রথম দিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নর্থ চ্যানেলে জলে নামার অনুমতি না মিললেও শুক্রবার সেখানে নামার অনুমতি পাওয়া গিয়েছিল।

আয়ারল্যাণ্ডের সময় অনুযায়ী সকাল সাড়ে সাতটা ও ভারতীয় সময় প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ তিনি পঞ্চম সিন্ধু জয়ের লক্ষ্যে নামেন। দীর্ঘ চ্যানেলের হিমশীতল জলে বেশীক্ষণ থাকার কারণে হাইপোথারমিয়া ও রক্ত জমাট বাঁধার মত দুর্ঘটনা সেখানে ঘটতে পারে। ভয়াল-ভয়ংকর সামুদ্রিক প্রাণীর হাতছানিকে উপেক্ষা করে সায়নী যেভাবে স্রোতের প্রতিকূলে এদিন দাপট দেখিয়েছেন তাতে সকলেই অভিভূত। এদিন সাঁতার চলাকালীন তাঁর পাশের একটি বোটের সামনে ভারতের জাতীয় পতাকাকে উড়তে দেখা যায়। অবশেষে শনিবার রাত তিনটের সময় সেই কাঙ্খিত জয় আসে।