শিক্ষক দিবসে রাজ্যের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ১৬ লক্ষ পড়ুয়াকে ট্যাব বা মোবাইল ফোন কেনার জন্য অর্থ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে রাজ্য সরকার। পড়ুয়াদের দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা । নবান্ন সূত্রে খবর, ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতীকী ভাবে পড়ুয়াদের হাতে এই অর্থ তুলে দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দিন থেকেই পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা পাঠানোর কাজ শুরু করে দেবে রাজ্য সরকার।
কোভিডের সময় লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল স্কুল–কলেজ। সেই সময় বাড়িতে বসেই যাতে পড়াশুনো করতে পারে তার জন্য ”তরুণের স্বপ্ন” প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পে পড়ুয়াদের জন্য ট্যাব বা মোবাইল কেনার অর্থ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর । কোভিডের পরও রাজ্য সরকারের তরফে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়াদের জন্য এই প্রকল্প চালু রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সরকার এবং সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত পড়ুয়ারা অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি মাদ্রাসা এবং সংখ্যালঘু স্কুলের পড়ুয়াদেরও এই সুবিধে দেওয়া হচ্ছে।
এই উদ্যোগটি মূলত ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য। ট্যাব দেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত মানের ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়া। এতে দক্ষতা বাড়বে, বাড়বে শিক্ষার মানও। শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বর্তমান প্রজন্মকে ডিজিটাল শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তাই তিনি রাজ্য সরকারের তরফে এই উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই প্রযুক্তিগত শিক্ষা–ব্যবস্থা অনলাইন ক্লাস এবং শিক্ষামূলক অ্যাপ ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। ই-বুক এবং অন্যান্য ডিজিটাল শিক্ষার সামগ্রী সহজেই এই প্রযুক্তির মাধ্যমে পাওয়া যাবে। ফলে, শিক্ষার্থীরা সহজে শিক্ষামূলক তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে এবং তারা প্রযুক্তিগত জ্ঞানও বাড়বে।
রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে রাজনীতির রঙ দেখছে বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি। এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী সমিতির তরফে স্বপন মণ্ডল বলেন, ”তরুণের স্বপ্ন” প্রকল্পের মোবাইল বা ট্যাব কেনার টাকা এ বছর এত তাড়াহুড়ো করে কেন দেওয়া হচ্ছে , তা সবার কাছেই স্পষ্ট। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের প্রতি যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে , তাকে প্রশমিত করতেই তড়িঘড়ি টাকা দিচ্ছে সরকার।
পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিজন সরকার বলেন, ‘‘আমার প্রশ্ন হল, রাজ্য সরকার এই প্রথম ট্যাব বা মোবাইল ফোন কেনার অর্থ দিচ্ছে না । কোভিডের সময় থেকে যে অর্থ দেওয়া শুরু হয়, সেই প্রক্রিয়া এখনও চালু রয়েছে, এতে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠনে সুবিধাই হয়েছে।