• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

আজ ডুরান্ড কাপ জিততে মরিয়া সবুজ-মেরুন ব্রিগেড

কোচ নর্থ-ইস্ট দলের রণকৌশলটা কী হবে, তা নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন

মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের নতুন কোচ হোসে মোলিনার কাছে শনিবার সবচেয়ে মর্যাদার লড়াই বলে চিহ্নিত হয়ে থাকছে। ভারতের মাটিতে পা দিয়ে মোলিনার প্রথম চ্যালেঞ্জই হল ডুরান্ড কাপ ফাইনালে বাজিমাত করা। স্পেনের এই কোচ নিশ্চয়ই নতুন কোনও ছক কষে প্রতিপক্ষ নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। স্বাভাবিকভাবেই এই লড়াইয়ে জেতার জন্য গোপনে কোনও রণকৌশল তৈরি করে ফেলেছেন, তা বলাই যেতে পারে। তবুও তিনি সতর্ক পাহাড়ি দলকে নিয়ে। কোচ মোলিনা খোঁজ নিয়েছেন, পাহাড়ি দলের ফুটবলাররা দারুণ দৌড়তে পারেন। শুধু তাই নয়, চকিত আক্রমণে বিপদ ডেকে আনতেও জানেন। তাই প্রতিটি মুহূর্তকে শুধু পর্যবেক্ষণ করা নয়, কীভাবে আঘাত হানতে হবে, তার একটা পরিকল্পনা সাজিয়ে নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার মোহনবাগান মাঠে অনুশীলন শুরু হওয়ার আগে সমর্থকরা একটু চিন্তায় পড়েছিলেন। এই চিন্তা সমর্থকদের কাছেই শুধু ছিল না, কোচ মোলিনার কাছেও ছিল। ব্যাপারটা কী? দলের অধিনায়ক শুভাশিস বসু খেলতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। গত ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি’র বিরুদ্ধে খেলার সময় শুভাশিস চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গিয়েছিলেন। সেই চোট নিয়ে তিনি খেলতে পারবেন কিনা, অনেকেই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু অনুশীলনের ঠিক আগেই হঠাৎ সমর্থকদের মধ্যে উল্লাস দেখা গেল। উল্লাসের কারণ হল, ড্রেসিং রুম থেকে মাঠের দিকে পা বাড়াচ্ছেন অধিনায়ক শুভাশিস বসু। কোচের মুখেও হাসি। এমনকি সমর্থকরা শুভাশিসকে পেয়ে নিজস্বী তুলতে ছুটে গেলেন। শুভাশিসও সমর্থকদের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুললেন। সমর্থকদের আবদারে সামিল হলেন শুভাশিস। শুভাশিস খেলতে পারবেন কিনা, তা ভেবেই অস্বস্তি বাড়ছিল মোহনবাগানের কোচের। কারণ রক্ষণভাগই একটা চিন্তার বিষয় ছিল। শুভাশিসের জায়গায় কে খেলবেন, তা নিয়ে ভাবনার অন্ত ছিল না। মাঠে নেমে শুভাশিস পুরোদমে অনুশীলন করলেন। অনুশীলনে কোনওরকম অসুবিধা হল না, তা দেখেই বোঝা গেল।

তবে, কোচ নর্থ-ইস্ট দলের রণকৌশলটা কী হবে, তা নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তা কিন্তু এখন গোপনে রেখে দিয়েছেন। খেলোয়াড়দের সেইভাবে নির্দেশ দেবেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। প্রায় দু’ঘণ্টা অনুশীলন করেছেন মোহনবাগানের খেলোয়াড়রা।  নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড দলের বেশ কয়েকজন তারকা ফুটবলার রয়েছেন। তাঁদের নিয়ে সতর্ক রয়েছেন কোচ মোলিনা। বিশেষ করে গিয়েরমো ফার্নান্দেস, আলিডাইন আজাইরে ও জিতিন এম এস দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন। তাঁদের পাশে পার্থিব গগৈ ও নেস্তর রজারকে নিয়েও ভাবতে হবে। সাধারণত, জিতিন বাঁ প্রান্ত থেকে আক্রমণ গড়ে তোলেন। আবার ডান প্রান্ত থেকে দুরন্ত ভূমিকা নিয়ে আক্রমণে ঝড় তোলেন আলিডাইন।

নর্থ-ইস্ট দলের ফুটবলাররাও অনুশীলনে নিজেদের ভুলত্রুটিগুলি শুধরে নিয়েছেন। তাঁরা আত্মবিশ্বাসী মোহনবাগানের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে। সেমিফাইনাল ম্যাচে নর্থ-ইস্ট দল যে প্রাধান্য দেখিয়ে শিলং লাজংয়ের মতো দলকে হারিয়ে দিয়েছে, সেই জায়গা থেকেই আবার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আক্রমণ গড়ে তুলতে চাইছে। তাঁরা ভালো করেই জানেন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের সমর্থকরা ভিড় করবেন। তাই বাড়তি মনোবল তৈরি করে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। দুই দলের ফুটবলাররাই ফ্রিকিক ও পেনাল্টি শুটআউট প্র্যাকটিস করেছেন। অনুশীলন শেষে দেখা গেল, মোবনগাবানের দুই তারকা ফুটবলার দিমিত্রি পেত্রাতোস ও মনবীর সিং পেনাল্টি শুটআউট প্র্যাকটিস করছেন। অর্থাৎ কোনওভাবেই যদি খেলার ভাগ্য টাইব্রেকারে ফয়শালা করতে হয়, সেক্ষেত্রে পেনাল্টি শুটআউটটা খেলোয়াড়দের কাছে বড় করে দেখা দেবে। হঠাৎই মোহনবাগান ও নর্থ-ইস্টের খেলাকে ঘিরে টিকিটের চাহিদা ভালো জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। দুই দলের খেলোয়াড়রা আশা করছেন, পুরো মাঠ ভরিয়ে দেবেন সমর্থকরা। গতবারের মতো এবারেও ডুরান্ড কাপ ফুটবলে বাজিমাত করে খেতাব জিতে নিতে খেলোয়াড়রা বদ্ধপরিকর।