• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বয়ানে বিস্তর অসঙ্গতি, ঘটনাস্থল সেমিনার রুম কি না তা নিয়ে ধন্দে সিবিআই

সিবিআইদের দাবি, সঞ্জয় এখনও পর্যন্ত দোষ স্বীকার করেনি

আরজি কর কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রাই। ফাইল চিত্র।

সেমিনার রুমই কি ঘটনাস্থল ? এবার এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে সিবিআই আধিকারিকদের। সম্প্রতি আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক–পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই আধিকারিকরা। এদের মধ্যে রয়েছেন হাসপাতালের কর্মী থেকে শুরু করে চিকি‍ৎসক এমনকি পুলিশকর্মীরাও। জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয়েছে এই ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়র সঞ্জয় রায়কেও। সকলের বয়ান বিশ্লেষণ করে বিস্তর অসঙ্গতি লক্ষ্য করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। এই কারণেই ঘটনাস্থল নিয়ে দানা বেঁধেছে সন্দেহ।

গ্রেপ্তারের পর কলকাতা পুলিশ দাবি করেছিল, ধৃত সঞ্জয় রায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু সিবিআইদের দাবি, সঞ্জয় এখনও পর্যন্ত দোষ স্বীকার করেনি। সূত্রের খবর, সঞ্জয় জানিয়েছে ধর্ষণ ও খুনের বিষয়ে সে কিছুই জানত না। ঘটন‍ার দিন সকালে সে হাসপাতালে ভর্তি এক পরিচিতকে দেখে করিডর দিয়ে ফিরছিল। সেই সময় সে দেখে সেমিনার রুম খোলা। তখন সেমিনার রুমটা ফাঁকাই ছিল বলে জানিয়েছে সঞ্জয়। ঘটনার দিন রাতে নির্যাতিতা তরুণী যে ৪ জন চিকিৎসকের সঙ্গে খাবার খেয়েছিলেন, তাঁদেরও ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। পাশাপাশি আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় সহ কয়েকজনের পলিগ্রাফ টেস্টও করানো হয়েছে। সকলের বয়ান বিশ্লেষণ করে তাতে বিস্তর অসঙ্গতি পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

সিবিআই সূত্রে খবর, তদন্তকারীদের কাছে যে ভিডিও এসেছে, তাতে নির্যাতিতার গায়ের চাদর দেখে মনে হচ্ছে, তা যেন পরিপাটি করে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে ধস্তাধস্তির সেরকম কোনও চিহ্নও দেখা যাচ্ছে না। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, ধর্ষণের মুহূর্তে ধস্তাধস্তি হয়েছিল। এই কারণেও তদন্তকারীদের মধ্যে  প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার মৃতদেহের শরীরের যে চাদর ছিল, তার রঙ নিয়ে জল্পনা ছড়ায়। চাদর বদল‍ের অভিযোগ তুলেছিলেন নির্যাতিতার বাবা–মা। যদিও পরে পুলিশ ব্যাখ্যা দিয়ে সেই দাবি অস্বীকার করেছে। ঘটনার পরে সকালে হাসপাতাল থেকে নির্যাতিতার বাড়িতে যে ফোন গিয়েছিল, সেই ফোন কলের ৩ টি অডিও বৃহস্পতিবার ভাইরাল হয়। যেখানে এক মহিলাকে বলতে শোনা যায়, ‘তিনি (নির্যাতিতা) সুইসাইড করেছেন হয়তো। মারা গিয়েছেন। আপনারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে আসুন।’ পাশাপাশি ফোনে ওই মহিলাকে এও বলতে শোনা যায় যে, আপনাদের মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই অডিও নিয়েও তৈরি হয়েছে বিতর্ক ।

উল্লেখ্য, শুক্রবার ফের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এ নিয়ে ১৪ দিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসারদের মুখোমুখি হলেন তিনি। আর জি করের তরুণী চিকিৎসক–পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা এবং হাসপাতালের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করছে সিবিআই। গত রবিবার সকালে সিবিআই আধিকারিকরা সন্দীপের বেলেঘাটার বাড়িতে গিয়েছিলেন। জানা যায়, হাসপাতালের আর্থিক অনিয়মের মামলার তদন্ত করতেই সন্দীপের বাড়ি গিয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।