কূটনৈতিক তিক্ততাকে দূরে সরিয়ে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে পাকিস্তান। অক্টোবরে পাকিস্তানে সাংহাই কো–অপারেশন অর্গানাইজেশন অর্থাৎ এসসিও–র বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে যোগ দিতেই এই সরকারি আমন্ত্রণ। আমন্ত্রণ জানিয়েছে শেহবাজ শরিফ সরকার। তার মধ্যেই শুক্রবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি স্পষ্ট জানান, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার দিন শেষ। তাঁর কথায়, আলোচনার পরিবেশ পাকিস্তানই শেষ করে দিয়েছে। এবার থেকে পাকিস্তানের প্রতি পদক্ষেপের জবাব ওদের ভাষাতেই দেওয়া হবে।
গত কয়েক মাস ধরেই ধারাবাহিকভাবে জম্মু-কাশ্মীরে একের পর এক জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে চলেছে। সূত্রের খবর, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই সব জঙ্গি হামলার পিছনে পাকিস্তানের পরোক্ষ মদত রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতেই পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি স্পষ্ট জানালেন, নিরবিচ্ছিন্ন আলোচনার যুগ শেষ হয়েছে। বিদেশমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, আলোচনা এবং সন্ত্রাসবাদ কখনই এক সঙ্গে চলতে পারে না। এই ভাষাতেই ভারতের অবস্থান জানিয়ে দিলেন জয়শঙ্কর। এ দিন দিল্লিতে একটি বই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে একথা বলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
সন্ত্রাসবাদের কোনও জায়গা নেই ভারতে।এই বার্তা বারবার দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বহু বার উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে। তবে কোনও রফাসূত্র মেলেনি। শুক্রবার বই প্রকাশের এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে জয়শঙ্কর জানান, পাকিস্তান সম্পর্কে আর কোনও ভাবেই নরম পন্থা নেবে না ভারত।
পাকিস্তান প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী জানান, জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা নিয়ে যে উত্তেজনা শুরু হয়েছিল, তা এখন শেষ হয়েছে। এখন পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের প্রসঙ্গ উঠছে। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করতে গিয়ে আমরা কখনই সন্ত্রাসবাদকে উপেক্ষা করতে পারি না। পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছেছে। এক্ষেত্রে সমঝোতার আর কোন জায়গা নেই। ” তিনি আরও বলেন ‘‘পাকিস্তান বরাবর চেয়েছে আন্তর্জাতিক সীমান্তে সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ভারতকে আলোচনার টেবিলে বসানোর । কিন্তু সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে ভারত কখনওই আলোচনায় বসবে না।’’
ভারতের আরেক প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে ভারত মিলেমিশে চলবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তি থেকে আমাদের সম্পর্কের উত্থান-পতন হয়েছে। এটাও স্বাভাবিক এখন যে সরকার চলছে, তার সঙ্গেও আমরা সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলব। বিদেশমন্ত্রী বলেন, “যে সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, তার সঙ্গেই আমরা আলোচনা করব, এটাই স্বাভাবিক। আমাদের স্বীকার করতে হবে যে , সেখানে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে। এই পরিবর্তন ভারতের পক্ষে বিঘ্নও ঘটাতে পারে।