নবান্ন অভিযান চলাকালীন পূর্ব বিভাগের সাইবার সেলের ইনচার্জ হিসেবে ফারলং গেটে ডিউটি করছিলেন। বিক্ষোভকারীদের ভিড় থেকে উড়ে এসেছিল ইট। চোখে লেগে গলগল করে রক্ত ঝড়তে থাকে। কিন্তু তার পরিণতি যে এতটা ভয়াবহ হবে তা ভাবতেও পারেননি কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। একের পর এক অপারেশনের হলেও ডাক্তারদের চিন্তা কাটেনি। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে চিরদিনের মত দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন দেবাশিস।
আধলা ইটের টুকরোর আঘাতে দেবাশিসবাবুর চোখের মণি ফেটে গিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে রাজ্যের সেরা সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকায় রাতেই বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় দেবাশিসবাবুকে। রাতেই অপারেশন হয় তাঁর। যদিও দৃষ্টিশক্তি ফেরানো যায়নি দেবাশিসবাবুর।
বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন পুলিশকর্মী। পুলিশের দাবি, বেশ কয়েকজনের আঘাত গুরুতর। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার রাতেই আহত সহকর্মীদের দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। নবান্ন অভিযানের জেরে আহত আনন্দপুর থানার ওসি সুমনকুমার দে সহ বেশ কয়েকজনকে রাতেই ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করা হয়।
এদিকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে পুলিশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, মঙ্গলবার পুলিশ খুব ভালো কাজ করেছে। ওদের হামলার মুখে পড়তে হয়েছে। রক্ত ঝড়েছে কিন্তু ওরা নিজেদের সংযত রেখেছিল।
ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নবান্ন অভিযান কর্মসূচিতে ১৫ জন কলকাতা পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। ১২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকার জানিয়েছেন, ১১-১২ জন সহকর্মী আহত হয়েছেন। রাজ্য পুলিশের হাতে ৯৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছে
এর আগে ১৪ অগস্ট ‘রাত দখল’ নামের কর্মসূচি চলাকালীনও এক মহিলা কনস্টেবল আহত হন। শম্পা প্রামাণিক নামে ওই মহিলা পুলিশকর্মীর চোখে এবং মুখে আঘাত লাগে। তাঁরও একটি চোখের দৃষ্টি চলে গিয়েছে।