রবিবার সকাল থেকেই আর বাস চলবে না টালা ব্রিজে। শুক্রবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বৈঠকের পর তিন টন ওজনের বেশি সমস্ত যানবাহনের ব্রিজে ওঠা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। বৈঠকে অন্যান্যদের সঙ্গে বর্তমান এবং ভাবী দুই মুখ্য সচিবই উপস্থিত ছিলেন।
আজ শনিবার দুপুরে কলকাতার নগরপাল অনুজ শর্মা টালা ব্রিজ পরিদর্শনে যাচ্ছেন। পুজোর সময়ে মানুষের দুর্ভোগ যতটা কম করা যায়, সেই বুঝে বিকল্প বাসরুট ঠিক করা হবে। পরিবহন দফতরের প্রধান সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম বলেন, বিকল্প রুট কী হবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। নােয়াপাড়া মেট্রোর সংখ্যা বাড়ানাের জন্যও আবেদন করা হয়েছে।
পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার এবং ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষাকারী সংস্থা রাইটস-এর যৌথভাবে এই ভারী যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুজোর পরে ফের ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ব্রিজের সংস্কারের। কাজ শুরু হবে ব্রিজের সংস্কার কাজ যাতে কোনওভাবে বাধাপ্রাপ্ত না হয়, সেজন্য ব্রিজের নিচে বসবাসকারী মানুষকে খালপাড়ে পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে পুর ও নগরােন্নয়ন দফতর।
এইভাবে ব্রিজের ওপর যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হলে পুজোর সময় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে প্রাইভেট কার এবং পণ্যবাহী ছােট গাড়ি (চলতি ভাষায় ছােটা হাতি) চলাচলে কোনও বাধা থাকছে না আপাতত। পণ্যবাহী যানগুলিকে বিকল্প রাস্তায় চলাচলে যাতে অসুবিধের সৃষ্টি না হয়, সেজন্য ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই টালা ব্রিজে পণ্যবাহী ভারী গাড়ি চালানাে বন্ধ করা হয়েছে।
বিধাননগর, ব্যারাকপুর, কলকাতা পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনারদের তত্ত্বাবধানে পুজোর সময়ে যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে টালা ব্রিজে। প্রতিদিন বিভিন্ন রুটের ছ’শােরও বেশি। বাস চলাচল করে টালা ব্রিজের ওপর দিয়ে। রবিবার থেকে টালা ব্রিজের ওপর দিয়ে সেইসব বাস চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। যাত্রীবাহী বাসের সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে বিকল্প বাসরুট ঠিক করা হবে পরিবহন দফতরের পক্ষ থেকে। টালা ব্রিজে না উঠে আর জি কর রােড ধরে পাইকপাড়া হয়ে বাসগুলি বি টি রােডের রাস্তা ধরতে। পারে তবে সেক্ষেত্রে অনেকটা সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে টালা ব্রিজের আশু সংস্কার জরুরি বলে মনে করছে প্রশাসন।
প্রথমে পােস্তা এবং পরে মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর থেকেই রাজ্যের ব্রিজগুলির স্বাস্থ্যপরীক্ষা নিয়ে টনক। নড়েছে প্রশাসনের পুর ও নগরােন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, যে কোনও কংক্রিটের তৈরি ব্রিজের আয়ই মােটামুটি পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত হয়। টালা ব্রিজের যা অবস্থা তা সারানাের মতাে অবস্থায় নেই। এই ব্রিজকে ভেঙে নতুন করে তৈরির কথা ভাবতে হবে। ফিরহাদ হাকিম বলেন, বর্তমানে টালা ব্রিজের নীচে প্রায় ৬৫ টির মতাে পরিবারের প্রায় দু’শাে মানুষের বাস। এর মধ্যে খালপাড়ে ৩০/৩৫ টি ঘরতে ইতিমধ্যেই বসবাসের উপযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে পুর ও নগরােন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে। আজ শনিবার থেকেই সেখানে পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা হচ্ছে, টালা ব্রিজের নীচে বসবাসকারীদের।