জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোটের দামামা বাজতেই ময়দানে নেমে পড়েছে সব রাজনৈতিক দল। এ বারের নির্বাচনে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে কংগ্রেস। বিধানসভা ভোটে এই দুই দল একসঙ্গে লড়লেও এখনও পর্যন্ত দুই দলের মধ্যে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়নি। মঙ্গলবার প্রথম দফা নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। কিন্তু শেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, দুই দলের মধ্যে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়নি। কয়েকটি আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে এনসি–র সঙ্গে মতভেদ তৈরি হয়েছে হাত শিবিরের। আর সেই জট কাটাতে সোমবারই উপত্যকায় পৌঁছেছেন কংগ্রেসের দুই প্রবীণ নেতা কেসি বেণুগোপাল এবং সলমন খুরশিদ। এনসি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পরই সমাধানসূত্র মিলবে।
প্রথম দফার প্রার্থীতালিকা ঘোষণার সময়সীমা মঙ্গলবার। কিন্তু
জোটের জট
অমীমাংসিতই থেকে
গেছে কাশ্মীরে।
এনসি এবং কংগ্রেসের মধ্যে আসন
সমঝোতার সমস্যা মেটাতে দুই
শীর্ষ নেতার দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড।
সোমবারই ফারুখ এবং
ওমর আবদুল্লার সঙ্গে বৈঠকে বসছেন কংগ্রেস নেতা
কেসি বেণুগোপাল এবং
সলমন খুরশিদ।
সূত্রের খবর, কাশ্মীর
উপত্যকায় কংগ্রেসকে পাঁচটি আসন
ছাড়তে চান
ওমর আবদুল্লারা।
জম্মুতে ২৮-৩০টি আসন দেওয়া
যেতে পারে হাত শিবিরকে। কিন্তু এই
প্রস্তাব কংগ্রেসের পছন্দ নয়।
সেখানে আরও বেশি আসনে লড়তে চায় তারা। তার
মধ্যে বেশ কয়েকটি আসন আবার
এনসিপির শক্তিশালী কেন্দ্র
হিসাবেই পরিচিত।
আসন রফা নিয়ে জট কাটাতে কংগ্রেসকে বিকল্প প্রস্তাবও দিয়েছিলেন আবদুল্লারা। সূত্রের খবর, ন্যাশনাল কনফারেন্স চেয়েছিল যে সমস্ত আসনগুলোতে জোটের দুই দলই লড়তে চাইছে সেখানে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হোক। প্রার্থী দিক কংগ্রেস-ন্যাশনাল কনফারেন্স দুই শিবিরই। কিন্তু কাশ্মীরের স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন। সব মিলিয়ে কাশ্মীরে আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে জোটের জট কাটেনি। এখনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারেনি জোট। এই পরিস্থিতিতে আবদুল্লাদের সঙ্গে সোমবার বৈঠকে বসছেন দুই কংগ্রেস নেতা। এই বৈঠকের পরে সমাধানসূত্র মেলার আশায় রয়েছে দুই শিবিরই।
এদিকে লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটের শরিক হয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছিল আম আদমি পার্টি। এবার জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচনে কাশ্মীরের ৭ টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল কেজরির দল। যেখানে পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির গড় পুলওয়ামায় আপের টিকিটে প্রার্থী হচ্ছেন ফৈয়জ আহমেদ সোফি।
উল্লেখ্য, ভোট ঘোষণার পর আসন সমঝোতা নিয়ে ফারুকদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি। কিন্তু তার পরও আসন সমঝোতা নিয়ে জট কাটেনি। সূত্রের খবর, জম্মু-কাশ্মীরের কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী আসন নিয়েই সমস্যা বেধে রয়েছে। দুই দলের স্থানীয় নেতৃত্ব ওই আসন ছাড়তে নারাজ। যার ফলে চূড়ান্ত করা যায়নি প্রার্থীতালিকা।
এদিকে রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেয় কেজরির দল। রবিবার আপের তরফে যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, কাশ্মীরের পুলওয়ামা, রাজপোরা, দেবসারা, ডোডা, ডোডা পশ্চিম, দোরু ও বানিহাল কেন্দ্রে তারা প্রার্থী দিতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে আপের যোগদান ভোট কাটাকাটির অঙ্ক বাড়িয়ে বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
প্রায় এক দশক পরে ফের বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে জম্মু ও কাশ্মীরে। উল্লেখ্য, ৯০ আসনের জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় কাশ্মীরে রয়েছে ৪৭টি আসন বাকি ৪৩টি আসন রয়েছে জম্মুতে। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর, ২৫ সেপ্টেম্বর ও ১ অক্টোবর মোট ৩ দফায় নির্বাচন হবে এখানে। ৪ অক্টোবর হবে ভোট গণনা। ২০১৪ সালে শেষ বিধানসভা ভোট হয়েছিল। প্রথম দফার নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৭ আগস্ট।