দেশে কখন নির্বাচন হবে, সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কোন প্রেক্ষাপটে তিনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়েছেন, তা তুলে ধরেন ড. ইউনূস। সেই সঙ্গে একটি উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করার জন্য তাঁর সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথাও ব্যক্ত করেন তিনি।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শপথ নেওয়ার দুই সপ্তাহের বেশি সময় পর আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সংস্কারের কাজ শুরু করেছে উল্লেখ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘দেশবাসীকে বলব, একটা আলোচনা শুরু করতে, আমরা সর্বনিম্ন কী কী কাজ সম্পূর্ণ করে যাব, কী কী কাজ মোটামুটি করে গেলে হবে।’
এই আলোচনার মাধ্যমে সরকার একটি দিকনির্দেশনা পাবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক আলোচনা থেকেই আসবে। এই দিকনির্দেশনা না পেলে আমরা দাতা সংস্থা ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনায় দৃঢ়তার সঙ্গে অগ্রসর হতে পারছি না।’
দেশের সংকটকালে ছাত্রদের আহ্বানে উপদেষ্টারা এই দায়িত্ব নিয়েছেন উল্লেখ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা সমস্ত শক্তি দিয়ে এই দায়িত্ব পালন করব। আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীও এই লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাই মিলে একটা টিম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘কখন নির্বাচন হবে, সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে, আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন।’
ছাত্ররা তাঁদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা এবং দেশের আপামর জনসাধারণ তাঁদের নিয়োগকে সমর্থন করেছেন বলে উল্লেখ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্রমাগত সবাইকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে যাব, যাতে হঠাৎ করে এই প্রশ্ন উত্থাপিত না হয় যে আমরা কখন যাব। তারা যখন বলবে, আমরা চলে যাব।’
সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকেও সংস্কার করবেন বলে জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নির্বাচন কমিশনকে যেকোনো সময় একটি আদর্শ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করার লক্ষ্যের কথা জানান তিনি।